Monday, May 18, 2020

নতুন যুগে পৃথিবী - এম. ইকবাল

পৃথিবী খুব সম্ভবত নুতন যুগে প্রবেশ করতে যাচ্ছে। 


    এই সময়ে পৃথিবীতে হতে পারতো তৃতীয় কোনো বিশ্বযুদ্ধ, যেটা অনেকদিন ধরেই অনেক বুদ্ধিজীবীদের আলোচনার বিষয়বস্তু ছিল, যদিও বিশ্বজুড়ে স্নায়ুযুদ্ধ চলছে দীর্ঘদিন ধরেই। এছাড়াও ইরান-যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাষ্ট্র-উত্তর কোরিয়া, ভারত-(কাস্মীর)পাকিস্থান, হিন্দু- মুসলিম, (ভারত- NRC, CAA), রোহিঙ্গা নিধন(মিয়ানমার), নির্বাচন ও নেতৃত্বের পালাবদল এবং আরও অসংখ্য রাজনৈতিক ইস্যুকে ঘিরে সারা পৃথিবীজুড়ে ইলেকট্রনিক মিডিয়া, প্রিন্ট মিডিয়া, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী, সাধারন মানুষ থেকে রাষ্ট্রীয় কর্নধার পর্যন্ত সবার মাঝেই এক ভয়াবহ অস্থিরতা কাজ করছে। সেক্ষেত্রে বিশ্বযুদ্ধ হলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতো নিঃসন্দেহে। যুদ্ধের ফলাফল যাই হোক না কেন অনিবার্য ফল হিসেবে পরবর্তী প্রজন্ম পরম্পরাগতভাবে প্রাপ্ত শত্রুতা লালন করে বেড়ে উঠত। ফলে পরবর্তী আরেকটা যুদ্ধের সম্ভাবনা থেকেই যেত।

    এক্ষেত্রে করোনা ভাইরাস সেই সম্ভাবনাকে নস্যাৎ করে দিয়েছে। মানুষে মানুষে শত্রুতার বদলে পৃথিবীর মানুষের সামনে নুতন চ্যালেন্জ ছুড়ে দিয়েছে। এতে মানুষ তার অসহায়তা এবং ক্ষমতার সীমাটাকে কিছুটা হলেও উপলব্ধি করতে পারছে। সেই সাথে যতো সময় যাবে এই উপলব্ধিটা ততোই স্পষ্ট হবে।
এটা আমার কথা নয়। বিগত পৃথিবীর ইতিহাস এটাই বলে। যতক্ষণ মানুষের সামনে মানুষ ব্যতীত অন্য কোন বিপদজনক শত্রু অনুপস্থিত ছিলো ততক্ষণ মানুষের মাঝেই বিভেদ ছিলো, মানুষই মানুষের শত্রু ছিলো। যখনই মানুষের সামনে তৃতীয় কোন বিপদজনক শত্রু এসে উপস্থিত হয়েছে তখনই মানুষের মাঝে বিভেদের পরিবর্তে ঐক্যতা এসেছে।

তাহলে কি মানুষে মানুষে ঐক্যতার প্রশ্নে তৃতীয় কোন শত্রু অনিবার্য?

সম্ভবত, না- অনিবার্য না। ওটা বিগত পৃথিবীর ইতিহাস। এখানেই পৃথিবীতে বড় একটা পার্থক্য ঘটে যাচ্ছে। আগামী পৃথিবীতে মানুষে মানুষে ঐক্যতার কারন হিসেবে তৃতীয় কোন শত্রুর প্রয়োজন পড়বে না। মানুষের নির্বুদ্ধিতার দিন শেষ হয়ে বোধের উন্মেষ ঘটতে যাচ্ছে। এখানেই মানুষ নতুন যুগের শুরু করতে যাচ্ছে।

No comments:

Post a Comment