Saturday, July 25, 2020

সরকার জৈব ক্ষমতা দ্বারা জনগণকে নিয়ন্ত্রণ করে - মোঃ আশরাফুল ইসলাম।






বাস্তুসংস্থানের উপর নির্ভর করে একটা এলাকার সংস্কৃতি গড়ে ওঠে। রাজনীতি যেহেতু সংস্কৃতি থেকে উদ্ভূত বা বিকশিত হয়, তাই নির্দিষ্ট ভৌগোলিক এলাকার বাসিন্দাদের জৈবনিক ক্রিয়াকলাপ থেকে রাজনীতি বিচ্ছিন্ন থাকতে পারে না বা বিচ্ছিন্নতায় রাজনৈতিক নিয়মাবলি প্রয়োগ হতে পারে না। সেক্ষেত্রে জৈবিক প্রবৃত্তি তথা রাগ, ক্ষোভ, ভালবাসা এগুলো রাজনীতি মারফত সবসময়ই মানুষ বা অন্য জীবের উপর প্রয়োগ হয়ে আসছে।

নাৎসি নেতা হান্স রাইটার জাতি রাষ্ট্র ও চূড়ান্তভাবে তাদের জাতিগত নীতিকে জীববিজ্ঞান ভিত্তিক বলে উল্লেখ করেন।

সরকার জৈব ক্ষমতা দ্বারা জনগণকে নিয়ন্ত্রণ করে। এক্ষেত্রে জৈব ক্ষমতা হল মানুষের জীবনের সকল ক্ষেত্রে রাজনৈতিক ক্ষমতার প্রয়োগ ও ব্যবহার। আদিম কিংবা কিছুদিন পূর্বের সমাজের দিকে তাকালেই দেখা যায় লাঠিয়াল সর্দার বা মোড়লের পাশে শারীরিকভাবে শক্তিশালী মানুষ থাকতো অর্থাৎ এই শারীরিক শক্তিকে রাজনৈতিক ভাবে ব্যবহার করা হতো। অনেকে জীবন ও শক্তিকে অস্ত্র হিসেবেও দেখিয়েছেন যেমন আত্মঘাতী জঙ্গিবাদ। সাধারণত মানুষের রাজনৈতিক আচরণ বিভিন্ন জীববিজ্ঞানগত প্রদর্শনযোগ্য নিয়ামকের দ্বারা নির্ণীত হয়।

মোটকথা জীবনীতি শাস্ত্র অনেক আগে থেকেই রাজনৈতিকভাবে প্রয়োগ হয়ে আসছে। কিন্তু জৈব প্রযুক্তির বিপ্লব আজ সমাজ রাজনীতির এক নতুন দিকের উন্মোচন করেছে। অর্থাৎ জৈব প্রযুক্তির বিভিন্ন প্রয়োগের মাধ্যমে জননীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে ব্যাপক আলোচনা আজ অনিবার্য।

আমরা কী এই জৈব প্রযুক্তি সামাজিক উন্নয়নে তথা সকল ধরনের জীবনের কল্যাণে বা তারা কীভাবে পরস্পর নিজেদের চালিত করবে তা নির্ধারণে ব্যবহার করব? অর্থাৎ এমন কোন কাঠামোর কথা ভাববো, যা সমস্ত জীবনকে ঘিরে আবর্তিত হবে এবং সেটা অবশ্যই স্ব স্ব ভৌগোলিক বংশগতি ও বৈচিত্র্যকে সমুন্নত রেখে সকল জীবনকে ছুয়ে যাবে? যেটা নীতিমালা, শিক্ষা, শিল্প, সরকার, বিজ্ঞান সবকিছুকে অন্তর্ভুক্ত করবে।

অথবা এটাকে কি নিছক ক্ষমতার এক নতুন প্রযুক্তি হিসাবে দেখব, যা পূর্বের বিভিন্ন প্রযুক্তির ন্যায় আশীর্বাদ না হয়ে মানব জীবনের অভিশাপ হয়ে দাঁড়াবে।

পরমাণু শক্তি যতটুকু মানব সভ্যতার অগ্রযাত্রায় ভূমিকা রেখেছে বা তথাকথিত ক্ষমতার ভারসাম্য তৈরি করেছে তার চেয়ে ঢের বেশি বিশ্ব রাজনীতিকে অন্তঃসারশূন্য করেছে। বিশ্ব রাজনীতির দৃশ্যপট সামনে আসলেই যেন মনে হয় এই দুচারটা পরমাণু শক্তিধর দেশের ঝগড়াঝাটিটাই বিশ্বরাজনীতি। অথচ বিশ্বরাজনীতির পরিসর কত ব্যাপক! এদের এই শিশুসুলভ ঝগড়াঝাটির মাঝে পৃথিবী পরিবেশ বিপর্যয় থেকে শুরু করে চরম ক্ষুধা ও দারিদ্র্যের যাঁতাকলে পিষ্ট হচ্ছে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের প্রতিরক্ষা খাতের এসব অনিয়ন্ত্রিত বাজেট দিয়ে অনেক আগেই ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও জলবায়ুগত সমস্যা নির্মূল করা যেত। দুঃখের বিষয় এগুলো রাজনীতিবিদদের কাজ নয়, গ্রেটা থুনবার্গের মতো বাচ্চাদের কাজ!

জীব বিজ্ঞান ও রাজনীতির সমন্বয়ে গঠিত এই নতুন টার্ম জীবনকে কী নিশ্চিত, টেকসই ও সমৃদ্ধির দিকে নিয়ে যাবে নাকি পশ্চাদপসরণ করবে? তা নিয়ে বিস্তর ভাবার সময় এসেছে বিশ্ব মোড়লদের, সেই সাথে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোকেও নিজেদের স্বকীয়তা নিয়ে এর বিরুদ্ধে দাড়াতে হবে জীবনের তাগিদে।

ইতোমধ্যে বর্তমান মহামারী সৃষ্টির জন্য এক দেশ আরেক দেশকে দোষারোপের কাঁদা ছোড়াছুড়ি শুরু করেছে। এই পরিস্থিতি যেমন সম্ভাব্য আগামীর বিভীষিকাময় সময়কে ইঙ্গিত করছে, ঠিক তার বিপরীতে এই গাঁয়ের থেকেও ছোট বিশ্ব-সমাজকে আলোর দিশা দেখাচ্ছে।

এখন এই পৃথিবীর মানুষকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে, তারা কি সভ্যতার বিনাশ চাইবে নাকি নতুন সূর্যের প্রত্যাশায় দিগন্তের দিকে চোখ মেলে তাকাবে।

লেখা পাঠাতে যোগাযোগ করুনঃ
মেসেঞ্জার অব কসমোলজি পেইজ 

No comments:

Post a Comment