Thursday, December 23, 2021

ফুলগুলো সব কোথায় হারালো - হাসান রাকিব।

ফুলগুলো সব কোথায় হারালো
হাসান রাকিব
হাসান রাকিব 

 হাওয়া মুভির রিভিউ পড়তে ক্লিক করুন।

একদিন তোমাকে বৃষ্টিভেজা গোলাপ দিলাম
তুমি গোলাপটা নিয়ে বৃষ্টিগুলো আমাকে ফেরত দিলে
তিস্তার মতো আটকে গেল
আমদের মধ্যে পানিবন্টন চুক্তি
ফলে একপাশে খরা একপাশে প্লাবন ভূমি 
সেই গোলাপ আমাদের মধ্যে শান্তি এনে দিতে পরেনি
যেমনটা পারেনি
সমাজতন্ত্র, গনতন্ত্র, পুঁজিবাদ, প্রজাতন্ত্রের রাজনীতি
শোষণ বাড়লো
দূষণ বাড়লো
বাণিজ্যিকভাবে বাড়লো ফুলের চাষ
মানুষের হৃদয়ের উর্বরতা বাড়লো না
ঐ যে একটা ফুল আছে
যে লাবণ্যের কথা বলে
আনন্দের কথা বলে
সাম্যের কথা বলে
যুদ্ধের মাঝখানে দাঁড়িয়ে শান্তির কথা বলে
সেই ফুলটা কোথায় হারালো?
ফুলগুলো সব কোথায় গেল? 
তরুণ হৃদয় থেকে ফুলগুলো সব কোথায় চলে গেল?

কলমে কবি হাসান রাকিব।

Tuesday, December 21, 2021

কবি তন্ময় সাহা'র আলোচনা- ২

কবি তন্ময় সাহার আলোচনা-২

কবি তন্ময় সাহা



ডুবে যাবো। যেহেতু ডুবে যাওয়া যায় এবং উদ্ধার করতে পারলে ডুবুরি পারিশ্রমিক দিয়ে আরো কিছু মানুষের হাসি ফোটাতে সক্ষম তাই ডুবে যাওয়াই শ্রেয়। 

জলে ডুবে যাবে নাকি অতলে? জল উপমা মাত্র আসলে সবই অতল, মনকে ধরা যায়! কতটুকো ভেদ করা যায় মাটির গর্ভ! ভেতরেও ডুবে যাওয়া যায়। 
ভেতরে ডুবে গেলে উদ্ধার করবে কে? উদ্ধার কর্তা হিসেবে তখন নিজেকেই আবির্ভূত করে মানুষ আর যাকে উদ্ধার করে তার কাছে থাকে গুপ্তধনের সুচারু নকশা, যার লোভে মুহুর্মুহু মানুষ আসতে থাকে এবং চাটতে থাকে পা। 

কেবল কিছু সংখ্যক মানুষ ডুবে যাবার বাসনা নিয়ে আসে, জানতে চায় কৌশল। উদ্ধার হওয়া ব্যক্তি তখন জানিয়ে দেয় এবং মানুষ গুলো কিছু কিছু করে ডুবে যায় আবার কিছু ব্যর্থ হয়ে চেষ্টা চালিয়ে যেতে থাকে। 

গুপ্তধন লোভীরা আসে-যায়, পথ বদলায়, পরিকল্পনা করে নকশা চুরির, গুমের এবং হত্যার। এরমধ্যে ডুবে যাওয়া মানুষ গুলোও ফিরে আসে গুপ্তধনের নকশা নিয়ে, এভাবেই চলতে থাকে লোভী এবং ডুবে যাওয়া মানুষের নকশার সাইকেল। 

এক রাস্তা থেকে বের হতে থাকে ক্রমশ অসংখ্য রাস্তা। 
কেউ ডুবে যাচ্ছে, কেউ লোভ করছে কেউ চুরি, গুম, হত্যা ইত্যাদি করছে, কেউবা আবার এদের শখ, বিলাসিতা, আপ্যায়ন এসব করছে। এতো এতো রাস্তা এক গন্ত্যব্য ঘিরে ধীরে ধীরে গড়ে উঠতে থাকে। 

কিন্তু মজার বিষয় হচ্ছে যাদের কাছে নকশা রয়েছে তারা কেউই গুপ্তধনের নকশা দেখতে পারে না, তার কারণ হচ্ছে দেখার জন্য যে আলোটা প্রয়োজন সেই আলোটা যার কাছে আছে সে বসে থাকেন গভীর অন্ধকারে, সেই অন্ধকার এতই অতল যে ডুবে যেতে যেতে মানুষ নবারুণের কবিতার ভাষায় বলে ওঠে "এই মৃত্যু উপত্যকা আমার দেশ নয়" এবং ফিরে আসে আবারো সেই নকশা হাতে। চলতে থাকে ব্যবসা-বাণিজ্য আর উনি অন্ধকারে বসে আলোর স্বপ্ন দেখান। 

আলোচনা-২ 
তন্ময় সাহা

Saturday, December 11, 2021

দায়হীন সর্দারপনা স্বৈরাচারী - ভূবন মুন্সী।

দায়হীন সর্দারপনা স্বৈরাচারী
ভূবন মুন্সী
messenger of cosmology 




পথশিশু ; যাদের মা বাংলাদেশ, রাষ্ট্র একান্ত অভিভাবক। মা বাকরুদ্ধ, উদাসীন অভিবাবকের তুমুল অবহেলা পেয়ে নষ্ট হয়ে গেলো তারা। একটি শিশুও নক্ষত্র হয়ে জ্বলে উঠলো না। অথচ জ্বলতো। স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পর আমরা পঞ্চাশটি অর্জন অবশ্যই বলতে পারবো, কিন্তু একটি ব্যর্থতাই আমাদের সমস্ত অর্জনে আগুন জ্বালিয়ে দেবে, ছাই করে দেবে। মানুষের বাচ্চা যেখানে অনাদরে, প্রকৃতির অপর বাচ্চাদের শরীরে আরও কুৎসিত হাত পড়েছে, তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। অথচ নিজেকে সৃষ্টির সেরা দাবী করলে সকল জীবের সেবা বা রক্ষণাবেক্ষণের ঠিকাদারি মানুষের কাঁধে বর্তায়। বেহুদা মাতব্বরি কে মানবে? দায়হীন সর্দারপনা স্বৈরাচারী। 

পঞ্চাশে এসে রাষ্ট্র শপথ করুক, একটি পথ শিশুও আর অনাদরে থাকবেনা। রাষ্ট্র স্বয়ং তার মাতৃত্বের ভূমিকায় থেকে নক্ষত্র করে দেবে প্রত্যেকটি শিশু। আমার আপনার শিশুর মতোন পথ শিশুও জ্বলবে। সংসদে পথ শিশুও কথা বলবে।

ভূবন মুন্সীর আরও লিখা -

মোহাম্মদ ইব্রাহীম খলিল এর লিখা

আসিফ ইকবালের লিখা


থাকো দেশে অথচ গীত গাও নাঙের - ভূবন মুন্সী।

থাকো দেশে অথচ গীত গাও নাঙের
ভূবন মুন্সী
messenger of cosmology 



"থাকো দেশে অথচ গীত গাও নাঙের " প্রবাদ  প্রতিম বাক্যটি  অধিক স্পষ্ট হয়ে উঠে যখন মগজটা স্বদেশের না হয়ে - হয়ে উঠে ভিনদেশের । 

আর মগজ স্বদেশের হয়ে ওঠে  অর্থাৎ যথাযথ স্বকীয় স্বদেশ বোধ গড়ে ওঠে যাঁদের নিপুণ কারিগরি সংগ্রামে ও দক্ষতায় তাঁরা বুদ্ধিজীবি । তাঁদের প্রচেষ্টায় বোধের ক্রিয়াতে জাগ্রত হয় প্রতিটি মানুষ । আর একাত্তরে বিজয় নিশ্চিত জেনেও বিরোধী শক্তি  সুকৌশলে নিকেষ করে এদেশের বুদ্ধিজীবি শ্রেণীকে। আমাদের তৈরি হয় চেতনাগত পুঙ্গুত্বের পথ। 

একাত্তরে রক্তদামে আমরা যেন কিনেছি চশমার স্বদেশী ফ্রেম, লেন্সদ্বয় এখানো রয়ে গেছে ভিনদেশীয় । ফলে স্বদেশ কে স্বদেশের মতো করে আজও দেখা হয় নি - দেশটা হয়ে ওঠেনি দেশবাসীর ; সেই সাথে বীর সেনানী শহীদ বুদ্ধিজীবি থেকে গেছে যথাযথ স্মরণ-শ্রদ্ধা ও ইতিহাসের অন্তরালে, দেশজ চেতনাহীন দেশটাও এগিয়ে যায়নি আপন কক্ষপথে । 

দেশ এগিয়ে যাওয়ার শর্তে স্বদেশ বোধ যেমন জরুরী তেমনি এর শুরুটা হবে বোধ জাগানিয়া শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি রাষ্ট্রীয় দ্বায়িত্ব পালনের মধ্য দিয়ে । 

জৈবিক চোখ থাকলেও বৌদ্ধিক চোখের অন্ধত্বে দেখা  হয়ে ওঠেনি 'দেখাতব্য'। বৌদ্ধিক চোখের ভাঁজ খোল "রাষ্ট্রীক ঠাকুর"।
                        রচনা: ডিসেম্বর 2017
                               ভূবন মুন্সী

Friday, December 10, 2021

আমার উড়বার স্বাধীনতা নেই - মিঞা মাসুদ।

আমার উড়বার স্বাধীনতা নেই 
messenger of cosmology
মেসেঞ্জার অব কসমোলজি 


ঘর ছেড়ে বেরিয়ে গেলো এক যুবক, বললো- আসি মা, আর কোন শব্দ নাই, চোখে আগুনের জল, পুকুর পাড়ের সুপারি গাছ তল দিয়ে দ্রুত হেঁটে যাচ্ছে, খেতের আইল দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে, গাভীন ধান খেত, সূর্য ডুবছে তখন, আকাশে হালকা আগুন, দোয়েল যেন কারো প্রতীক্ষায় ডালে বসে, যুবক হারিয়ে গেল দূরে, গুলি, বেয়োনেট, চিৎকার, রক্ত, খুন, পাল্টা আগুন, প্রতিঘাত, বিজয় উল্লাস, যুবক কী চেয়েছিলো, কেন চেয়েছিলো, কেন দাবাতে চেক দিতে এগিয়ে দিলো আপন জীবন, পঞ্চাশ পেরিয়ে গেলো, দোয়েল এখনো কার যেন প্রতীক্ষায়, গুলি, বেয়োনেট, চিৎকার, রক্ত, খুন, পাল্টা আগুন নেই, যুবক নেই, যুবকের কী স্বপ্ন ছিলো তাও কেউ জানেনা, পঞ্চাশ বছর ধরে পতাকা উড়ছে, পতাকা উড়লে কি হয়, কতটুকু হয়, কেমন করে হয়, পঞ্চাশ!  দোয়েলের চোখে এখনো বিরহ, পাখি উড়লে আমি তাকিয়ে থাকি, আমার উড়বার স্বাধীনতা নেই কেন?


Tuesday, November 30, 2021

মানুষ ও প্রফেশনাল ম্যান - মোহাম্মদ ইব্রাহীম খলিল।

অ্যাবস্যুলেটলি ইউ আর নট এ ম্যান! আর ইউ ম্যান? অনারেবল ম্যান?  শিওর?
messenger of cosmology


আপনি কি জানেন সমাজে কেন আপনি সম্মান পান? কি এমন আছে যার জন্য লোকে আপনাকে সম্মান দেখায়? সত্যিই কি?...মানুষ হিসেবে আপনি সমাজে সম্মানিত!!
সমাজে আপনার প্রথম পরিচয় প্রফেশন। দ্বিতীয় পরিচয় অর্থবান বা ক্ষমতাবানের বাপ, ভাই, ছেলে অথবা শালা। অর্থাৎ তৃতীয় বা চতুর্থ স্টেজে আপনি "মানুষ"। সুতরাং লোকে যে কারণে আপনাকে সম্মান করে তা মানুষ হিসেবে না। আপনি----

* রাজনৈতিক নেতা
* ডাক্তার
* ইঞ্জিনিয়ার
* এ্যাডভোকেট
* বিসিএস ক্যাডার
* সরকারী কর্মকর্তা
* এসপি/ডিসি
* পুলিশ, ডিবি, 
* ব্যাংকার
*হুঙ্কার
*মহাজন
* জজ সাহেবের বাপ অথবা ছেলে।
* ওমুকের জামাই
* তমুকের শালা হিসেবেই আপনি সম্মানী।

হ্যাঁ, প্রফেশন, ক্ষমতা, আর টাকার মানদন্ডেই লোকে আপনাকে সম্মান প্রদর্শন করে থাকে।
অর্থাৎ সম্মান, সৃষ্টির সেরা জীব 'মানুষ' হিসেবে নয় বরং লাভে, লোভে বা ভয়ে লোকে আপনাকে যতটুকুন করে তা স্রেফ 'মহাজন' হিসেবে?
বিষয়টা আপনাদের জন্য লিখতেছিনা। নিজে স্পষ্ট হবার তাড়নায় কলম ধরছি।

এবার একটা উদাহরণ দিই পরিস্কার হবে। কিন্তু পরিস্কার জলেও অনেকেই তাকাতে চায়না। কারণ নিজের আসল রূপটা যদি নিজের কাছে ধরা পড়ে যায়!! আমার অবশ্য নর্সিসাস আছে। আত্মপ্রেমে মগ্ন হয়ে রোজই স্বচ্ছ জল কিংবা আয়নায় তাকিয়ে থাকি। দেখার চেষ্টা করি কেমন আমি।

এখন মূল প্রসঙ্গে আসি- আপনি সম্মানী লোক, কারন আপনি এ্যাডভোকেট, ডাক্তার বা মন্ত্রী। এখন আপনার পরিচয় থেকে এ্যাডভোকেট, ডাক্তার বা মন্ত্রী পদবী তুলে দিলাম (সদ্য বহিষ্কৃত গাজীপুর সিটি মেয়র জাহাঙ্গীর)। আপনার কোটি টাকা নিয়ে অর্থশূন্য করে দিলাম। আপনার বংশগৌরব মুছে দিলাম,,,,,পরক্ষণেই  কতটুকু সম্মান প্রাপ্তি হবে আপনার! হবে কি-- সিনহা?

"আমিও মানুষ তুমিও মানুষ" বোধে
যে সম্মান প্রাপ্তি হয় বা হবে ততটুকুই আপনার মানব সত্বা বা মনুষ্যত্ব। আর যতটুকু  মনুষ্যত্ব- আপনি ততটুকুই মানুষ। বাকি সবটুকু জুড়েই আপনি প্রফেশনিস্ট বা প্রফেশনাল জীব 'কীট' হিসেবে অমানুষ। তাই 'আশরাফুল মাখলুকাত হিসেবে- আপনি তৃতীয় বা চতুর্থ স্টেজে মানুষ।  আপনাকে প্রফেশনালি মান দেওয়া হচ্ছে,  মানুষ হিসেবে নয়। আপনি মানুষ হিসেবে নিজেকে সামনে আনেননি, মনুষ্যত্বের বিকাশ ঘটিয়ে আপামর মানুষের হয়ে উঠতে পারেননি। সত্যি বলছি- আপনি মানুষ হয়ে উঠতে পারেননি।

Saturday, November 20, 2021

ধন্যবাদ, নতুন দলকে সুযোগ দেবার জন্য - মোহাম্মদ ইব্রাহীম খলিল সুমন।

"ধন্যবাদ, নতুন দলকে সুযোগ দেবার জন্য"


মেসেঞ্জার অব কসমোলজি
Messenger Of Cosmology 




রাজনীতির ক্ষেত্রে জনগণ ও জনপদ ধ্রুব সত্য হলেও, রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে কাঠামোগত দিকটা গুরুত্বপূর্ণ আর কাঠামোগত দিকটা সময়ের সাথে বিবর্তিত হয়, বদলে যায়, বদলে নিতে হয়। কাঠামো এখানে যন্ত্র সদৃশ। বদলটাই অনিবার্য। স্বাধীনতা পূর্ববর্তী ঔপনিবেশিক রাষ্ট্রিক কাঠামো আর স্বাধীন দেশের রাষ্ট্রিক কাঠামো অভিন্ন রেখে আমরা যখন দেশ পরিচালনার জন্য সরকার গঠন করি, চেতনাগত দিক থেকে স্বাধীনতা ও পরাধীনতার পার্থক্য বুঝলেও কেবল বিগত পঞ্চাশ বছরে অধরা থেকে গেছে রাষ্ট্রীক কাঠামোর বিষয়টা। অর্থনৈতিক শোষণ ও নিপীড়নের জন্য বিদেশিদের হাতে গড়া রাষ্ট্র কাঠামোয় স্বাধীন দেশের সরকার বসা মাত্রই ব্যর্থতার শিকল গলায় জড়িয়ে যাচ্ছে। 'পান থেকে চুন আর তেল থেকে নুন' এর ব্যবস্থাপনায় জনপ্রিয়তায় তুঙ্গে থাকা সরকার প্রায় সর্বত্রই বারংবার গনবিরোধীর তকমা নিয়ে হাজির হচ্ছে। যেন যে লংকায় যাচ্ছে, সেই রাবণ!

দেশের ভালোর সাথে সবার ভালোটা জড়িয়ে থাকে বলেই-

হাজার বছরের ইতিহাস বিশ্লেষণ পূর্বক,
আমরা বলেছিলাম- বৃটিশ সৃষ্ট আইন, আদালত, আমলা, প্রশাসনে সাজানো রাষ্ট্র ব্যবস্থাপনায় ডান বামের যত- আদর্শিক, দেশপ্রেমিক, যোগ্য, দক্ষ ও সৎ নেতৃত্বই আসুক না কেন তিনি ব্যর্থ হতে বাধ্য। 

রাষ্ট্র ব্যবস্থাপনায় থাকা সরকার কে ব্যর্থতার 'দ্বায়' মুক্তির ঐতিহাসিক পথ ও পদ্ধতি নিয়ে ২০১৯ এর নির্বাচনের পূর্বে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বাক্ষাত ছিল অতীব জরুরী। গণভবনে স্বাক্ষাত সিডিউলের জন্য আওয়ামী ঘরানার বহু রথী-মহারথী-সারথীর শরণাপন্ন হলাম, বিম্বিসার-অশোকের ধূসর জগতে,,,, অনেক ঘুরলাম।

কিন্তু ! না সাক্ষাৎ পেলাম, না পেলাম সিডিউল, বুঝলাম মক্কা বহুদূর!

দেশে যত বিশৃঙ্খলা, অরাজকতা তার জন্য দ্বায়ী বিরোধী দল আর যা কিছু ভালো তা আওয়ামী লীগ এর! অর্থাৎ দেশের ভালো একমাত্র আওয়ামী লীগই চায় বা চাইবে। অন্য কেহ চাইতে পারে না কিংবা দেশ মানুষের জন্য ভালো কিছু নিয়ে প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত যাওয়ার কোনো রাস্তা অন্তত আওয়ামী লীগে নেই। 

বি:দ্র: সরকার প্রধান কিংবা প্রধানমন্ত্রী কে নিয়ে স্পর্শকাতর, অরুচিকর বা নেগেটিভ না বলা পর্যন্ত (প্রশাসন বা সরকারী বাহিনীর কান খাড়াই হয় না) আর মিডিয়া তো অন্য জিনিস,,,, শুধু কুকুর কামড়ালেই নিউজ হয়, ভালো কিছু এদের নজরেই আসে না। সত্যিকার অর্থে নেগেটিভ বা কামড়া-কামড়ির সংস্কৃতিতে নিমজ্জিত হতে পারিনি বলেই হয়তো সরকার প্রধান আমাদের দিকে দৃষ্টি ক্ষেপণ করেননি। যাক সে সব কথা...

সাধারণ হিসেবে আমরাও এটাই চাই, রাষ্ট্রীয় মসনদে যে সরকারই থাকুক, সবার ভালো করুক, সবাই কে ভালো রাখুক। স্বাধীনতা নিঃসন্দেহে বাঙালি জাতির শ্রেষ্ঠ অর্জন। কিন্তু স্বাধীনতা পরবর্তী এমন একটি সরকার দেখাতে পারেন? যে সরকার জনগণের সরকার! 

ব্যপক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গঠন করলেও ২/৩ বছরের মধ্যে জনমনে যাকে নিয়ে বিরূপ, বিদ্বেষ বা অসন্তোষ দেখা যায় নি? 

রাষ্ট্র তথা দেশ পরিচালনার ক্ষেত্রে যাঁরা ব্যর্থ হননি?

পরিচালকের আসনে বসা মাত্র সবার সব ঐতিহ্য, অর্জন, উন্নয়ন তলানিতে ঠেকেনি?

আগামীতে আরো ঠেকবে, আরো পঁচবে- যে যত ভালোই হন না কেন। কারণ এটাই রাষ্ট্রতত্ত্ব বা সাইন্স।

ডান বাম নয়, আশু সমস্যা সমাধানের জন্য- হাঁটতে হবে 'দেশ' বরাবর।... এর বাইরে যে যত বেশি গা দোলাবে, চোরাবালিতে সে তত দ্রুত ডুববে।

রাজনীতি, রাজনীতির পথ বেয়েই বর্তমানে এমন পর্যায়ে চলে এসেছে,,,, যার দরুন ষোল কোটি বাঙালির হৃদয়ে গেথে থাকা 'নৌকা আর ধান' এর মধ্যে থেকে যেকোনো একটি চিরতরে বিদায় নিতে যাচ্ছে,,,, অদূর ভবিষ্যতে। ডু অর ডাই। 

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি অভয় দিলে মনের অব্যক্ত কথাগুলো  বলতে চাই, বাঁচতে চাই, সাথে সমগ্র দেশকে নিয়ে। 


লেখক-
মোহাম্মদ ইব্রাহীম খলিল সুমন
গবেষক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।



Wednesday, November 10, 2021

ছোটগল্প - ভাঙচুর - ভূবন মুন্সী।

ভাঙচুর

messenger of cosmology
ভূবন মুন্সী



সুবোধ চুরুট টানতে টানতে ঘরে প্রবেশ করলো। ডান হাতে স্মার্ট ফোন। ফোনটা টেবিলে ধাক্কা দিয়ে রেখে বললো- বাল ছাল মিটিং টিটিং আর ভাল্লাগেনা। দেশ টেশ গোল্লায় যাক, সবাই মারা দিক, আমার কী? তাড়াতাড়ি মিটিং শেষ করবেন।

প্রগতি পার্টির অগ্রজ নেতা উত্তম আগে থেকেই বসা। রুষ্ট চোখে তাকালো সুবোধের দিকে- তুমি এতো স্ল্যাং ল্যাঙ্গুয়েজ কোথায় শিখলা?

ক্যান, আপনার দেশ থাইকা শিখলাম। যা শেখানো হইলো তায় শিখলাম।

তোমার মাথা বন্ধক দিছো?- উত্তম বললো। 'সব ব্যাপারে সিলি মুড বন্ধ কর।'

সুবোধ এবার মনে মনে কথা বলছে- শালা! খালি উপদেশ। কী বাল ফালান সারাদিন, জানি।

সকাল আর মাগরিব একসাথে ঘরে ঢুকলো। দুজনের সখ্যতা খুব। সবার জানা মতে ইটিস পিটিস চলে। তবে সকালের প্রেম বিরহের কাব্যগ্রন্থ বেশ সাড়া পেয়েছিলো। মারজুক রাসেলের দেহবন্টনবিষয়ক দ্বিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষর কাব্য গ্রন্থটিও বেশ সাড়া ফেলে দিয়েছিলো তরুন ও বুদ্ধিজীবী মহলে। 

সুবোধ বাঁকা চোখে তাকিয়ে আছে, সকালকে তার খানকি খানকি লাগে। যদিও সকাল ওতো খারাপ না। মাগরিব ছেলেটার মধ্যে লাম্পট্যের জ্বিন আছড় করে আছে। 'শালা, মালটারে ঠিক ঝুটিয়ে নিছে।'

বিপ্লব, স্লোগান, উদ্যম আর মেধা একসাথে এলো। বিপ্লব বললো- সবাই এসে গেছে? সুবোধ বললো- হ্যাঁ। উত্তম বললো- দাদা, সাহস আর দৃষ্টি এখনো আসেনি। বাদবাকি আমরা সবাই আছি। 'সাহস অসুস্থ দাদা, ও আজ আসতে পারবেনা। দৃষ্টিও আসবেনা। দৃষ্টি গতকাল শ্বশুর বাড়ি গেছে।'

উত্তম ভাবে সুবোধ ছেলেটা বেশি সুবিধার না হলেও কাজে পারদর্শী। সবার দিকে নজর তার।

সবাই গোল টেবিলে বসে গেলো। মিটিং শুরু। "দেশের চলমান সংকট ও সমাধান শীর্ষক আলোচনা" - প্যানাটা দেয়ালে সাঁটা। এয়ার ফ্রেশার লেমন গন্ধ ছড়াচ্ছে। মাগরিব কথা বললো দ্রব্য মূল্যের উর্ধগতি নিয়ে। 'এটা একটা কূটনৈতিক ব্যাধি', 'মন্ত্রী ও দোকানদারদের স্বার্থগত সন্ধি বারবার এ ব্যাধি বাড়িয়ে দিচ্ছে। '

সকাল সাহিত্যের আকাল নিয়ে কথা তুললো। 'নপুংসক পিরিয়ড পার করছি আমরা।'

স্লোগান, উদ্যম, মেধা জনগণকে দেশের সংকট নিরসনে কি করে এক করা  যায় তায় ভাবছে।

উত্তম সুশীল সমাজের নিরব ভূমিকার নিন্দা জানিয়ে বলতে থাকলো- দেশটা কে দেখবে তবে? কে আর্ত মানুষ নিয়ে ব্রিফ করবে? আমাদের রোজ সংবাদ সম্মেলন করা দরকার।

সবাই সবার কথাকে যৌক্তিক ও যুগসত্য মনে করে তালি বাজাচ্ছে। কথার ফাঁকে ফাঁকে তালি পড়া এদেশের বংশগত রেওয়াজ।

সুবোধ লাইটার বের করে চুরুট ধরাতে যাচ্ছে... 'মিটিং শেষ?' সবাই ক্রোধ ঝাড়লো। কুল হতে বললো।

'থামুন সুধীবৃন্দ'- সুবোধ বললো। 'দাদা, সংযত গত বছর গুম হলো, এখনো খবর নাই। আমরা যদি অর্গানাইজড থাকি, তবে সংযতকে নিয়ে কোন পদক্ষেপ কেন নেইনি? সভ্যকে মেরে ফেলা হলো! কি হলো? মাঝে মাঝে গোল টেবিলে আসলাম, কন্ঠ খিঁচলাম, চলে গেলাম- কিছু হবে? আমরা সমাজ ও রাষ্ট্রের কোন বালই ছিড়তে পারবোনা। এটাকে না বলে সংগঠন, না সাংগঠনিক চরিত্র। যার যার, তার তার- কী সংগঠন? সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধির কোন পদক্ষেপ আমাদের আছে? নাই। ক্যামনে! ক্যামনে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব!'

বিপ্লব বললো, উত্তম কিছু বলবা? 'দাদা, আমরা হুট করে কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারিনা। আবেগীয় সিদ্ধান্ত নিলেও এগিয়ে যেতে পারবোনা।' কাউন্টার টক! সুবোধ কথার পা ঠেঁলে দিলো উত্তমের কথায়। 'হুট করেনা মানে কী আঠারো মাসে বছর গোনা! আবেগের রস ছাড়া ছোবড়া বুক নিয়ে বদল চাচ্ছি? বাহ্! "I love my country" এটা আবেগীয় নয়!'

'প্লিজ সাইলেন্ট' বিপ্লব সবার উদ্দেশ্যে বললেন। 'পরস্পরকে ভালোবাসি, রেসপেক্ট করি। নিজেরা এতো কথার বিভেদে জড়ালে হবে? কথার হাত ধরেই মনের বিরোধ আসে।'

সুবোধ বললো- দাদা, এটাতো ব্যক্তি বিরোধ নয়, মতের দ্বন্ধ। এটা ছাড়া পরিকল্পনার স্বচ্ছতা আসবে কোথা থেকে? একেক জন আমরা একেক প্ল্যাটফর্ম থেকে এসেছি। নয়া উদ্যোগে, নয়া প্ল্যাটফর্মের চুলচেরা স্বচ্ছতা দরকার, চরিত্রের ভঙচুর দরকার।

বিপ্লব, উত্তমরা এখন যে যার মতো। মাগরিব আর সকাল সংসার করছে। স্লোগান কন্ঠ ক্যান্সারে ভূগছে।উদ্যম, মেধা বিদেশ পাড়ি জমিয়েছে। 

সেদিনের সেই বৈঠকটাকে রাষ্ট্র পক্ষ দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্র মূলক বৈঠক হিসেবে চিহ্নিত করেছিলো। জঙ্গিবাদের কিছু আলামতও নাকি বৈঠক স্থলে পাওয়া গিয়েছিলো। মিডিয়া দারুণ উদ্বেগে কলম চালিয়ে দু চার দিন পর থেকেই আরেক উদ্বেগে ব্যস্ত হয়ে গেছে। সময় দা পত্রিকার নাম পাল্টে ফেলেছে। বিপ্লবদের সাথে সংযোগ থাকার ব্যাপারে কোন ডকুমেন্ট না থাকায় উনি পর্দার আড়ালেই রয়ে গেলেন।

সুবোধ এখনো কারাগারে। সময় দা তার জামিনের দাবিতে নিরপেক্ষ মহল থেকে কথা বলছেন।

Monday, November 1, 2021

ছোটগল্প - আড্ডা- ভূবন মুন্সী

 আড্ডা

Messenger of cosmology
ভূবন মুন্সীর ছোটগল্প- আড্ডা




বাহিরে তুমুল বৃষ্টি। শৈশবের আকাশ ভাঙা দিন যেনো ফিরে এলো ফের। উৎসব আয়োজনে মগ্ন মানুষ। ধোঁয়া সরিয়ে দেখে নিই মানুষের আনাগোনা।
আমার চোখ প্যারালাল দৃষ্টি ফেলে বসে থাকে। ধোঁয়ারা স্পাইরাল হয়ে উর্দ্ধমুখী।
বাউল বলেছিলো,
সত্ত্বা যদি স্পাইরাল হয়ে উর্দ্ধে উঠে, অতপর ছুঁয়ে ফেলে সহস্রার তবেই মুক্তি; কথাটি মনে পড়তেই অন্তর্মুখী হলাম।শামসুদ্দিন আবুল কালামের মতো পথ জানা নাই ভাবে বসে আছি। বাউল বাক্য যেন অচিন ক্রিপ্টোগ্রাফ।
'কি খবর?' শব্দ শুনে হুঁশ হলাম; কবি আরও কিছু বলেছে কি-না শুনি নাই।


চোখে তাকালাম। অপোজিট চোখ থেকে জিজ্ঞাসা এলো, কেমন আছেন?
কিছু উত্তর এলোনা কন্ঠ ছুঁয়ে।
তবু বললাম আড়ষ্ট আছি, বুঝা যাচ্ছে না কিছু। তবে প্রবলেম আছে।
কেমন?
কন্ট্রাডিকশন।
যেমন?
ভাবগত।
এক্সপ্লেইন্যাবল?
নো, আনএ্যাবল।
হোয়াই আনএ্যাবল! আই'ম এক্সপ্লেইন ইট। মি. সাধু বলে উঠলো।
কবি থামিয়ে দিয়ে বললো, আপনি সবটা শোনেননি!
'অজান খবর না জানিলে কিসের ফকিরি' বলে সাধু ভাবে গেলো।
স্টপ কবি, উনাকে বলতে দিন, আমি বললাম।
'এই আমরা বহির্মুখে ব্যাস্ত,
কী করে জানবো অন্তরের খবর!
কে আছে সেখানে
কি চায়
কেনো চায়
কখনো কি জানা হয়েছে আমাদের!
আত্মতত্ত্ব জানিনা
কি করে জানবো আত্মার খবর!' সাধু বলতে থাকলো।
'একবার একূলে 
আরেকবার গোকূলে,
ইহাই কন্ট্রাডিকশনের মূল কারণ।'


ভাই খেলার কি খবর? অর্থ এসে জিগ্যেস করলো।
মুড পাল্টে গেলো সবার।
মি. সাধু ঠা ঠা হাসি থামিয়ে বললো, কার খেলা কে খেলায় জানিনাতো ছোট ভাই।
বাংলাদেশ জিতবে,
আমি শিওর,
আই লাভ বাংলাদেশ।
ভাই আমি কি একটা চা খেতে পারি?
তবে জিততে কষ্ট হবে- অর্থ বললো।
আমি বললাম, হ্যা।
সে বললো, ভাই আপনারা কি প্রাইমারি এক্সাম দিয়েছেন?
আমি বুঝলাম আড্ডার পাশা এবার উল্টালো।
'ভাই কেমন দিলেন? যারা টিকবে তারা কিন্তু প্লেয়ার। প্রশ্ন কিন্তু স্ট্যানডার্ড হয়েছে।'
কবি বললো, 'প্লেয়ার তো ভাই সবাই। টিকা না টিকা দিয়ে যোগ্যতা ম্যাজার হয়না। এটা পরীক্ষা নাকি প্রহসন!এটা সেটা কত কোটা! প্রশ্ন আউট! মাজা আর কোস্তের জোর!২৪লক্ষ এপ্লিকান্টের বিপরীতে ১২সহস্র চেয়ার! ফাকিং সিস্টেম!'


ধোঁয়া টানছে সবাই। গিঞ্জি ঘরে ছড়িয়ে আছে সাড়ে চার হাজার রাসায়নিক পদার্থ। শিরায় শিরায় ওদের স্রোত। বুক চেম্বারে নিকোটিনের চলাচল। একদিন সে কাবু করবে সচল চেম্বার। তবু টানছি। এখানে সবাই টানছে। কারণ জিগ্যেস করলে হয়তো বলবে এমনিই টানি; সেই মেয়েটির মতো করে 'এমনিই সাঁজি'।
অবশ্য ঢাকা'র অবস্থা আরও দিগম্বর। মল- মূত্র- ধোঁয়া একাকার।
রূপম গুনগুনিয়ে গান গাইছে, 
রাত জাগা চোখ নষ্ট বাতাস 
পাশে কেউ নেই একলা হতাশ 
আর ভূল দর্শন গিলে গিলে তোমার আমার 
বাড়ছে বিসুখ।
সাধু উঠে দাঁড়ালো।
'সবাই থাকুন।
আসি আমি' বলে বেরিয়ে গেলো।
 বাহিরে এখনো বৃষ্টি হচ্ছে। ততোটা তুমুল নয়। সবাই বেরিয়ে যাবার সময় এখন।
ওয়াটার ক্যালকুলাসে আমরা কেউ দক্ষ নই। কথার ক্যালকুলাস কারো জানা নেই। এতোক্ষণে বৃষ্টিকণা, কন্ঠকথা কোন পথে কোন গন্তব্যে গেলো হিসেব কষা হলোনা কারও। সবাই ছুটলাম ঘরে, প্রাত্যহিক অভ্যাসের পথে।

০৩.০৬.১৯

Sunday, October 31, 2021

সুস্থ পৃথিবী মানুষের জন্মগত অধিকার - ভূবন মুন্সী

"সুস্থ পৃথিবী মানুষের জন্মগত অধিকার"

মেসেঞ্জার অব কসমোলজি 


ইলন মাস্কের কার্বন নির্গমন না করা car project কে সাধুবাদ দিয়েছিলাম। তার ইচ্ছে  দূষণ মুক্ত পৃথিবী টিকে থাক বহু বছর। বলেছিলাম, এ ইচ্ছা ছেঁড়া চুলে খোঁপা বাঁধার সাধ। 

বহু রাষ্ট্র, জাতি, বহুজাতিক বহু কোম্পানি নিয়ে আমাদের এই পৃথিবী। এরা নিজেরা পরস্পর প্রতিযোগিতায় ব্যস্ত। ব্যক্তি টেক্কা দিচ্ছে ব্যক্তিকে, এক জাতি আারেক জাতিকে, রাষ্ট্র রাষ্ট্রকে আর কোম্পানিগুলো ন্যাংটো হয়ে টেক্কা দিচ্ছে আরেক কোম্পানিকে। এগিয়ে যেতে চাইছে। উন্নতি চাইছে।

এই এগিয়ে যাওয়া বা উন্নতি লাভ করা বলতে কী বুঝি? 

ধনতান্ত্রিক বিশ্বে ব্যক্তি, জাতি, রাষ্ট্র এবং কোম্পানি সমূহ ব্যক্তিগত আচরণ করে চলছে। সামষ্টিক কোন নীতি বা অখন্ড সঙ্ঘবদ্ধতার অনুপস্থিতিই এর কারণ। 




ব্যক্তিগত আচরণ করতে গিয়ে আমরা যেমন যাচ্ছেতাই কাজ করি- চুরি করি, ঘুষ খাই, চাকু বানাই, বন্দুক কিনি, বিঘায় বিঘায় জমি কিনি, টাকা দিয়ে ব্যাংকের লকার ভরি, মারামারি করি, গুলি করি - জাতি, রাষ্ট্র এবং কোম্পানি সমূহ একই কাজ করে। একক ভাবে পৃথিবীর মালিক হচ্ছে। আপাতত আমাদের মনে মগজে এটিই উন্নতি।

ব্যক্তিকে লাগাম পড়ানোর দ্বায়িত্বটা পালন করে রাষ্ট্র। রাষ্ট্রকে লাগাম কে পড়ায়? পুরো পৃথিবীতে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে কোম্পানি সমূহ এদের লাগাম কে পড়াবে? 

আন্তর্জাতিক কোন সমস্যা সমাধানে কোন রাষ্ট্র না আসলে তাকে বাধ্য কে করবে? উন্নত দেশ সমূহ পরিবেশের পাছা মারছে, কে তাদের রুখে দেবে?

পৃথিবীর পরিবেশ অখন্ড। কোন প্রান্তে কোন ব্যক্তি, গোষ্ঠী, জাতি, রাষ্ট্র, কোম্পানি পরিবেশের সঙ্গে ব্যবিচার করলে গোঙাতে হয় পৃথিবীর সমগ্র মানুষকে। 


পরিবেশ আন্দোলন তাই পুরো পৃথিবীর সাথে সম্পৃক্ত।

স্লোগান হলো, পৃথিবীতে বাস করার লাইসেন্স আছে?
না থাকলে বহিষ্কার। অর্থাৎ পৃথিবীতে বাস করার জন্য সে অযোগ্য। তাকে জরিমানা গুনতে হবে।

রাষ্ট্র সমূহ চলে রাজনীতি মারফত। রাষ্ট্র তার অভ্যন্তরে অনেক বিধি নিষেধ আরোপ করতে পারে। অন্য রাষ্ট্রকে মিনতি করা ছাড়া আর কিছুই করতে পারেনা।

পৃথিবীটা যেভাবে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, আপনার কী মনে হয় মিনতি কোন ফল দেবে?


যদি না দেয় তবে ভেতর থেকে ভাবতে হবে। সমাধান প্রয়োজন? আর এটাতো ঠিক প্রয়োজন যত দূরেই থাক তাকে হস্তগত করতে আমাদের জন্মের সমস্ত আয়োজন।

অখন্ড পৃথিবীতে অখন্ড রাজনৈতিক কাঠামো, অখন্ড সংবিধান ছাড়া কিভাবে গোল টেবিল বৈঠক হতে সমাধান বেরিয়ে আসতে পারে?

এই মহাবিশ্বে মানুষের বাঁচার জন্য আজ অবধি একটিই গ্রহ- পৃথিবী। পৃথিবীটা সকলের। সুস্থ পৃথিবী মানুষের জন্মগত অধিকার।


আপাতত বৈশ্বিক রাজনৈতিক কাঠামো না আসা পর্যন্ত আমাদের প্রচেষ্টা চলতে থাকুক। ব্যক্তি, গোষ্ঠী, সংগঠন, মিডিয়া সবাই মিলে সচেতন হই বসুমাতার সুস্থতা নিয়ে। পরিবেশ বিপর্যয় রুখে দিতে গড়ে তুলি সচেতন আন্দোলন। 

৩১-১০-২০২১

Wednesday, October 27, 2021

প্রয়োজন শক্তিশালী স্থানীয় সরকার - মুরশীদ সেলিন।

প্রয়োজন শক্তিশালী স্থানীয় সরকার - মুরশীদ সেলিন

মেসেঞ্জার অব কসমোলজি 



প্রথম কথা হচ্ছে সংবিধানের যেকোন বিধানের সমালোচনা, বিরোধিতা ও তা পরিবর্তনের দাবী করা সকল নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার। এতে করে  কোন আইন অমান্য করা হয় না এবং কেউ তাতে রাষ্ট্রদ্রোহী হয়ে যায় না। গনতান্ত্রিক রাষ্ট্রের সংবিধান সংশোধনের সুযোগ এবং প্রক্রিয়া তাই সংবিধানের মধ্যেই লিপিবদ্ধ থাকে। 

একটি আদর্শ পরিস্থিতিতে সংবিধান থেকে রাষ্ট্রধর্ম এবং বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদ দুটোই একসঙ্গে বিলোপ করা বাংলাদেশ রাষ্ট্রের ভবিষ্যতের জন্য মঙ্গলজনক হবে। এদুটো বিষয়ের কোন প্রায়োগিক মূল্য না থাকলেও এর মনোস্তাত্বিক অভিঘাত ব্যপক ও সুদূরপ্রসারী। রাষ্ট্রধর্মের কারনে অমুসলিমরা যেমন দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক হবার হীনমন্যতায় ভোগেন তেমনি বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদের কারনে অবাঙ্গালীদের মধ্যে উপেক্ষিত হয়ে থাকার মনোবেদনার উদ্ভব ঘটে। এগুলো আমাদের অগ্রযাত্রার পথে বড় অন্তরায়। 

কিন্তু সমস্যা হচ্ছে বাংলাদেশ রাষ্ট্র এখন সংবিধান অনুসরন করে চলে না। এখানে ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর ইচ্ছার শাসন কায়েম হয়েছে অনেক আগেই। বিগত পঞ্চাশ বছরে সংবিধানে যতগুলো পরিবর্তন হয়েছে তার হাতেগোনা দু’একটি বাদে বাকী সবগুলোই হয়েছে ব্যক্তি বা গোষ্টীর স্বার্থে। এসব ক্ষেত্রে জনগনের ইচ্ছা, মতামত কিংবা স্বার্থের প্রতি বিন্দুমাত্র তোয়াক্কা করা হয়নি। 

বংলাদেশ বর্তমানে যে পরিস্থিতিতে দাড়িয়ে তাতে বিদ্যমান সংবিধান সংশোধন, সংযোজন, পরিমার্জন, পরিবর্ধন করে একে গনতান্ত্রিক রূপায়ন সম্ভব কিনা তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। সেক্ষেত্রে একটি নতুন সংবিধানের অধীনে দ্বিতীয় রিপাবলিকের পথে হাটাই সবচেয়ে বাস্তবসম্মত বলে মনে হয়। 

গত তিন দশকের অভিজ্ঞতায় এটা স্পস্ট যে সংসদীয় গনতন্ত্র বাংলাদেশে চরমভাবে অকার্যকর ও ব্যর্থ হয়েছে। সংসদীয় গনতন্ত্রে জন্য যে মাপের রাজনৈতিক সংগঠন এবং নেতৃত্বের মধ্যে যে ধরনের উন্নত নৈতিক দৃঢ়তার প্রয়োজন তা এখানে ভয়ানকভাবে অনুপস্থিত। 

এককেন্দ্রীক রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের উচিত রাষ্ট্রপতিশাসিত সরকারপদ্ধতিতে ফিরে যাওয়া। বিচারবিভাগ ও আইনবিভাগকে সম্পূর্ণরূপে নির্বাহী কর্তৃত্ব থেকে পৃথক ও স্বাধীন করার মাধ্যমে নির্বাহী বিভাগের জবাবদিহীতা নিশ্চিত করা। সতেরো কোটি মানুষের দেশে কেন্দ্রীয় সরকারের আকার ও ক্ষমতা ছোট করে জেলা কিংবা বিভাগীয় পর্যায়কে একক হিসেবে কেন্দ্র করে প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরনের মাধ্যমে শক্তিশালী স্থানীয় সরকার গড়ে তুলতে না পারলে মানুষের অধিকার নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। 

পুনশ্চ বলে রাখা দরকার যে এ সবকিছুই একটি আদর্শ ও মুক্ত পরিবেশ ও পরিস্থিতির আলোচনা। এখন আমরা যারপরনাই বিভ্রান্ত ও বিক্ষিপ্ত। ফলে এসব কথা অনেকেরই ভাল নাও লাগতে পারে।

ফ্রানৎস কাফকা - হাসান রাকিব - মেসেঞ্জার অব কসমোলজি।





ফ্রানৎস কাফকা বিংশ শতাব্দীর বিশ্বসাহিত্যের সবচেয়ে পভাবশালী লেখক।

এ পর্যন্ত নোবেল বিজয়ী ১০৯ জন লেখকের মধ্যে ৩২ জনই তাঁদের লেখায় কাফকার সরাসরি প্রভাব আছে বলে স্বীকার করেছেন। উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের পরে আর কেনো লেখককে নিয়ে এতটা লেখালেখি বা গবেষণা হয়নি, যা হয়েছে কাফকাকে নিয়ে। গত শতকের মধ্য-নব্বইয়ের আগেই, মৃত্যুর সত্তর বছরের মধ্যে, তাঁকে নিয়ে লেখা হয়ে গেছে ১০ হাজার বই; আর ১৯৯৬ থেকে ২০১০ এর ভেতরে প্রতি ১০ দিনে তাঁর ওপর বের হয়েছে একটি করে নতুন গবেষণা- গ্রন্থ। 

কাফকার সাথে আমার পরিচয় অনেকদিন আগের, তাঁর লেখা মেটামরফোসিস গল্পের মাধ্যমে অসাধারন গল্প;
মধ্যবিত্ত পরিবারের উপার্জনকারী যুবক গ্রেগর সামসা একজন বিক্রয়কর্মী। সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখে সে একটা আড়শোলা হয়ে গেছে, এরপর'ই গল্পটি মোড় নিতে থাকে বিভিন্ন দিকে যে মা তার এতো কাছের তিনি তাকে দেখতে আসতে চাচ্ছেন না যে বোনকে তিনি এতো ভালোবাসতেন গানের স্কুলে ভর্তি করে দিতে চেয়েছিলেন তার কাছেও তিনি অসহ্য হয়ে উঠছেন। বাবা তাকে আপেল ছুড়ে মারছেন যার আঘাতে তার শরীরে ক্ষত তৈরি হয়, তাকে পঁচা উচ্ছিষ্ট খাবার দেওয়া হয় কাজের মহিলা এসে খাবার দিয়ে যায় মারে কাজের মহিলা তাকে আঘাত করতে চায়। গ্রেগর সামসা যে এখন আড়শোলায় পরিনত হয়েছে সে মাঝেমাঝে  তার ঘরের দরজা দিয়ে মাথা বের করে দেখতে চায় বসার ঘরে সবাই কি করছে?
 কি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে? তারপর এক সময় তার ঘরের দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয় মাঝে মাঝে খাবারও দেওয়া বন্ধ করা হয়।
বন্ধ ঘরে সামসা দেয়াল বেয়ে বেয়ে হাঁটে ঘরের সিলিংএ দুই পাশের দেয়ালে,মাঝে মাঝে দেখতে চায় বাহিরে বৃষ্টি হচ্ছে কিনা, সে সবার সাথে কথা বলতে চান বোঝাতে চান যে সে হয়তো আরশোলা হয়ে গেছে কিন্তু সে এখনো সে তাদের গ্রেগর সামসা'ই রয়ে গেছে সে সব আগের মতোই উপলব্ধি করতে পারে কিন্তু তার কথা কেউ বুঝতে পারে না।
তারপর একদিন গ্রেগর আহত হয় ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে যায় তার নড়াচড়া অতঃপর ক্ষুধার্ত অবস্থায় চলতে থাকে তার দিনযাপন এদিকে তার বাবার ছূড়ে মারা আপেলের পিঠের ক্ষতটাও বাড়তে থাকে এবং একদিন পরিবারটি আবিষ্কার করে যে আরশোলাটা মারা গেছে। আর গল্পের শেষটায় দেখা যায় গ্রেগরের মৃত্যুতে পরিবারটা সস্থি পায় এবং সবাই মিলে কোথাও বাস ভ্রমনে বের হয়।

এক অদ্ভুত ও আশ্চর্য রকমের গল্প মেটামরফোসিস, কাফকা এখানে গল্পে একজন মানুষকে আরশোলাতে রুপান্তরিত করেছেন কিন্তু বাস্তব জীবনে একজন মানুষের পক্ষে কখনো আরশোলা হওয়া সম্ভব নয়। তাহলে এখানে এই রুপান্তরটা কি মানুষের মনোজগতের নাকি মানুষের সম্পর্কের এমন একটা প্রশ্ন ফ্রানৎস কাকাকে করা যেতেই পারে, কিন্তু হয়তো কাফকা এমন প্রশ্নের উত্তর দিতে চাননি তাই গল্পটায় লিখে গেছেন।

- হাসান রাকিব

পৃথিবী তুমি প্রেমিক খোঁজ



পৃথিবী তুমি প্রেমিক খোঁজ

ইয়াসিন আরাফাত



সভ্যতার নিগুঢ়ে বাণিজ্য, যান্ত্রিকতার দাপট ছাড়িয়ে যাচ্ছে মানুষ। সভ্যতার বাণিজ্যদশা চলছে যন্ত্রের সাথে মানুষের বিবর্তন।
রাষ্ট্রিক শিক্ষা বোধের চক্ষু বেধে রাখে আক্ষরিক শিক্ষায়।
আর শিক্ষা শুধু শিক্ষা নয় কিছুটা প্রমত্তরসও বটে। রসের গলাধঃকরণে পালকের মত টালমাটাল নাগরিক। 
নেশার ঘোর যেন এক সরলরেখা :
জন্ম-পারিবারিক যন্ত্রে পদার্পণ-মেকি সমাজে পদার্পণ-শিক্ষা ব্যবস্থায়(প্রমত্তরস) প্রবেশ-ক্যারিয়ার কপচানো-বিবাহ-প্রজনন ক্রিয়া-মৃত্যু।

আর সব মাতাল।

রাষ্ট্রের জন্মচোখ খেয়ে নিচ্ছে শকুন। স্বাধীনতা আর চোখে ভাসে না।
যান্ত্রিকতার দাপট পুঁজিনীতি যেন মানুষ যন্ত্রের এক অদৃশ্য রিমোট। জীবনের যাপন হয়ে উঠেছে যাপন।
মানুষ যেন একটা ব্যান্ড। জন্মের সতিত্ব হারিয়ে পরিণত হচ্ছে পতিতায়। 

শুধু একটা চুমো বিপ্লব এনে দিতে পারত কিন্তু তা বেছে নিয়েছে ভোগবাদী ঠোঁট। তাই এখন পুঁজিবাদী দুনিয়ার মানুষ ব্যাক্তিক ঠোঁটকে ভোগের শস্য ভাবে।
আর প্রেম তার লিঙ্গের সীমানাকে ছাড়িয়ে উঠতেই পারে না।

পৃথিবী তুমি প্রেমিক খোঁজ!

২৩.০৬.১৪২৭

ইমোশন বনাম রিয়েলিটি - ভূবন মুন্সী।



ইমোশন বনাম রিয়েলিটি




আপনি দেশ মানুষ নিয়া ভাবতে এলেন কেন ভাই? 
দেশ দুনিয়া জাহান্নামে যাক, আপনার কি? বিপ্লবের জন্য, বদলের জন্য কেউ কী আপনাকে ভাড়া করেছে? জোর করেছে স্লোগান দিতে? মিছিলে যেতে?

পৃথিবী যে গতিতে পাগলা হয়ে যাচ্ছে - একে লাগাম পড়ানো চাট্টিখানি কথা না! আপনার ইমোশন, রিয়েলিটি, ক্যাপাবিলিটি, নলেজ আর দম লাগবে বিপ্লব করতে। ধৈর্য লাগবে।

কী, আপনার অনেক ইমোশন? কত রাত মানুষের কথা ভেবেছেন? কেন মানুষের কথা ভেবেছেন? মানুষের মুক্তির জন্য, শান্তির জন্য? নাকি বেহুদা ইমোশন?

ইমোশন দিয়া কিচ্ছু হবেনা? তবে ভাই, আপনি গতি আনবেন কোত্থেকে? অন্যের দুঃখে ব্যাথিত হবেন কি করে?

রিয়েলিটি? হ্যা, এটা লাগবে। থাকতে হবে। কিন্তু আপনে রিয়েলিটি রিয়েলিটি কইরা চিল্লাইতাছেন ক্যান! বাস্তবতায় আপনি বেকার, দূব্বল, বাপ চাচা কেউ এমপি মন্ত্রী না। ভাই, এতো রিয়েলিটি নিয়া মানুষের কথা ভাবোন যায়? কার্ল মার্ক্সের রিয়েলিটি কী ছিলো? বঙ্গবন্ধুর রিয়েলিটি?

এতো রিয়েলিটি নিয়া মনুষ গুনতে আইছেন? দেশ দুনিয়ার মানুষ হিসাব করতেছেন? আরে আপনার পরিবারে কয়টা মাথা কনতো! কী চারটা? পাঁচটা? আরেকবার হিসেব করুন। দেখুন তো আপনার বাপ ভাইয়ের মাথাটা বাদ পড়লো কিনা! অতি বাস্তবতায় বুঁদ থাকা ব্যাটারা বউ সন্তান ছাড়া কারো মাথা গুনতে পারেনা। আপনার দ্বারা বিপ্লব, বদল, সঙ্ঘবদ্ধতা? সম্ভব না ভাই।

ধৈর্য? কতদিন ধরছেন ভাই? কী, হিসাব নাই! হ্যা ভাই, এটাইতো ঠিক। আপনি জীবন পুড়িয়ে মানুষের কথা ভাবছেন, এখানে তো হিসাব থাকবোই না। শুধু মানুষের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাবেন। যতদিন বাঁচবেন, ততদিনই সংগ্রাম করে যাবেন।

আপনি কী পাইলেন? না, আপনি কিচ্ছু পাননি। পাবেনও না! সত্যি বলতে কী, আপনি কী ডিমান্ড রাখেন? কী প্রত্যাশা আপনার? দেশ দুনিয়া যদি আপনার সংগ্রামের মূল্য তাৎক্ষণিকভাবে বুঝতে পারে, তবে তো সব মানুষ সুবোধ! সুবোধ সমাজের জন্য আপনি এতো ঘাম ঝরাচ্ছেন কেন?

আর যদি সমাজে সুবোধ না থাকে, তবে আপনি কারো কাছে কিছু, এমনকি সম্মান প্রাপ্তিও আশা করতে পারেন না। আদম হতে মুহাম্মদ (সঃ), সক্রেটিস হতে চে, গৌতম হতে  লালন তাঁরা কী প্রত্যাশা করেছিল?

দেখুন, আপনার চোখের সামনেই আদালত আড়াই হাজার বছর পরে সক্রেটিসকে নির্দোষ ঘোষণা করলো। এইতো গত কাল কিংবা পরশু বঙ্গবন্ধুকে ঢাবি তার ছাত্রত্ত্ব ফিরিয়ে দিলো।

সমস্ত সাজানো অপরাধ আর অপবাদ কাঁধে নিয়া তাঁরা একটা জিনিসই প্রত্যাশা করতেন, তা হলো দেশ দুনিয়া মানুষের মুক্তি। তাই না?

তাঁদের আক্ষেপ ছিলোনা, ব্যক্তিগত প্রত্যাশা ছিলোনা। ছিলোনা, কারণ তাঁরা বন্দীদের জন্য লড়ছেন- কারাগারে, কাঁটাতারে, লোভে মোহে বন্দী মানুষ মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত কিছু কী দিতে পারে?

ভাই, দমটা তো লাগবে। তেজ বিকাইলে চলবো? যতদিন দম টানতে পারবেন, ততদিন দম রাখবেন। দম না থাকলে আপনার সব কিছুতেই ভয়, দ্বিধা জাগবে। 

ঝিলাম নদীর তীরে পুরুর কথা আপনার মনে আছে? ব্যাটার দম ছিলো। স্বামীজীর কথা মনে করুন, ক্যামন দম! সেই সময় জাত ধর্ম নিয়া কথা কইতে লালনের দম লাগেনি? 

আপনি এইসব ঐতিহাসিক ঘটনা গুলা পৌরাণিক বইলা চালায়া দিয়েন না। ঐতিহাসিক সত্য, রিয়েলিটিকে নাটক ফটক বা ইমোশনালি আলাপ পাড়া ভাইবেন না। সবটাই রিয়েলিটি।

ইতিহাস তো থেমে যায়নি। ইতিহাস রচিত হচ্ছে। হতেই থাকবে। আপনার ইতিহাস। আপনি সিরাজ নাকি মীরজাফর? আপনার নাম আপনি নিজেই লিখবেন ইতিহাসের পাতায়।

ভূবন মুন্সী

Tuesday, October 26, 2021

শব্দের রাজনীতি এবং গণমাধ্যম - মুরশীদ সেলিন।



শব্দের রাজনীতি এবং গণমাধ্যম
messenger of cosmology



‘ভোটের অধিকার’ আদায়ে আ.লীগের পথেই হাঁটবে নুরুলদের দল - এটা ২৬ অক্টোবর ২০২১ এ প্রকাশিত দৈনিক প্রথম আলোর একটি সংবাদ শিরোনাম। 

লক্ষ্য করার বিষয় যে প্রথম আলোর কাছে দলটি অধিকার পরিষদ নয়, বরং নুরুলদের দল। এরা কিন্তু আওয়ামীলীগকে হাসিনাদের দল, বিএনপিকে খালেদাদের দল, জাসদকে ইনুদের দল কিংবা সিপিবিকে সেলিমদের দল বলে পরিচয় করিয়ে দেয় না। প্রথম দিনেই অধিকার পরিষদকে নুরুলদের দল বলে চিহ্নিত করার মধ্য দিয়ে যে বার্তাটি পাঠকের কাছে যায় তা হলো ‘ওটা আসলে কোন রাজনৈতিক দল নয়, বরং নুরুলদের মত কয়েকজনের একটা গ্রুপ মাত্র’। 

এবার শিরোনামের মূল খবরে আসা যাক। প্রথম আলো বলছে ভোটের অধিকার আদায়ে আওয়ামীলীগের পথেই হাটবে অধিকার পরিষদ। আপাতদৃষ্টিতে পাঠকের কাছে বিভ্রান্তিকর মনে হতে পারে বিষয়টা, অনেকের কাছে হাস্যকরও ঠেকাতে পারে। কিন্তু এ প্রসঙ্গে প্রতিবেদনের অংশটি পড়লে এর প্রেক্ষাপট সম্পর্কে ধারনা পাওয়া যায়। 

প্রথম আলো বলছে, “মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষের শক্তির সঙ্গে জোটবদ্ধ হওয়ার আশঙ্কা আছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে দলের আহ্বায়ক রেজা কিবরিয়া বলেন, ‘আমরা এ ব্যাপারে এখন যে প্রধানমন্ত্রী আছেন, ওনার শিক্ষা নেব। উনি যেভাবে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ১৯৯১ সালে কাজ করেছেন, আমরা সেভাবে অগ্রসর হওয়ার চিন্তা করছি। যাঁরা বাংলাদেশের জনগণের ভোটের অধিকার আদায়ের জন্য লড়াই করতে রাজি আছেন, আমরা তাঁদের সঙ্গে কথা বলব, তাঁদের সঙ্গে কাজ করব। এ ব্যাপারে কারও আপত্তি থাকলে থাকতে পারে, তাতে আমাদের কিচ্ছু করার নেই।”

১৯৯১ থেকে ২০২১ - ৩০ বছর খুব লম্বা সময় নয়। বিশেষত আমাদের যাদের বয়স পঞ্চাশ থেকে ষাটের মধ্যে তাদের স্মৃতি এত কম সময়ে ফিকে হওয়ার সম্ভাবনা কম। কিন্তু নতুন প্রজন্ম যাদের বয়স ২০ থেকে ৩০ এর মধ্যে তাদের অনেকেই হয়তো জানেন না ১৯৯১ এ কী হয়েছিলো। ফলে তাদের মধ্যে কিছুটা বিভ্রান্তি সৃষ্টির সুযোগ থেকেই যায়। 

এরশাদ পতনের পর ১৯৯১ সনের ২৮ শে ফেব্রুয়ারীর প্রথম নির্বাচনে অপ্রত্যাশিতভাবে বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন করে বিএনপি। সংসদে আওয়ামীলীগ, জাতীয় পার্টি, জামায়াতে ইসলামিসহ সবগুলো ছিলো বিরোধী দল এবং সেই সুবাদে শেখ হাসিনা ছিলেন বিরোধী দলীয় নেতা। মাগুড়া উপনির্বাচনে কারচুপির পর ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তত্বাবধায়ক সরকারের দাবীতে বিরোধী দলগুলো যে আন্দোলন শুরু করে, প্রধান ও বৃহত্তম বিরোধী দল হিসেবে আওয়ামী লীগের নেতা শেখ হাসিনাই ছিলেন সে আন্দোলনের নেতা এবং সেই আন্দোলনে জাতীয় পার্টি ও জামায়াতে ইসলামের সক্রিয় সমর্থন ও অংশগ্রহন ছিলো। জোটবদ্ধভাবে না হলেও নিজেদের মধ্যে লিয়াজো করেই  আন্দোলনের কর্মসূচী পালিত হয়েছে এবং পরবর্তীতে সংবিধান সংশোধন করে তত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো। 

তো সেই সময়ে ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে জামায়াতের অংশগ্রহনে কোন সমস্যা না থাকলে এখন কেন তা বড় সমস্যা হিসেবে হাজির হচ্ছে সেই প্রশ্নটি অনুচ্চারিত থেকে যাচ্ছে। 

বিভ্রান্তির এই কালে ইতিহাসের এই সত্যকে মাথায় রেখে গনমাধ্যম পাঠ করলে পাঠকরা কিছুটা হলেও রাজনীতির পাঠ উদ্ধার করতে সমর্থ হবেন বলে আশা করা যায়। কোন রাজনৈতিক দলের পক্ষে সাফাই গাইতে না চাইলেও গনমাধ্যমের মতলবি রাজনীতির বিষয়টি উপেক্ষা করে থাকা কঠিন।

মুরশীদ সেলিন
রাজনীতি বিশ্লেষক