দায়বদ্ধতা যাদের কাঁধে, তাদের পক্ষ থেকেই দায় নেওয়া, না নেওয়ার প্রসঙ্গ থাকে বা তাদের মুখ দিয়েই বেরিয়ে আসে দ্বায়িত্ব পালনের অগ্নি শপথ অথবা নির্লজ্জের মতো মিউ মিউ কন্ঠে বেরিয়ে আসে- এ দায় আমি-আমরা নেবো না। দায়বদ্ধতার পদে আসীন থেকে দায় না নেওয়া যেমন বেইমানী, তেমনি দায় পালনে অক্ষম হলে পদত্যাগ করা বা সবাইকে সাথে নিয়ে দায় পালনে সচেষ্ট হওয়া বৌদ্ধিক সচেতনতা এবং সততাকে প্রকাশ করে। কিন্তু চলমান সামাজিক, রাষ্ট্রিক সংকটে দায় এড়িয়ে খরগোশের মতোন ঘাসে মুখ লুকানোর অভ্যাস বেড়ে গেছে, সেই সাথে বেড়ে গেছে দায় অস্বীকার করে বেইমানীর প্রবনতা। বেইমানদের শত ধিক, ছিঃ!
“প্লে থেকে পিএইচডি- যেমন কোথাও নেই আমার দেশটা”, তেমনি প্রাইমারীর কক্ষ থেকে বিশ্ব বিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস- সর্বত্র এক ইতিহাস বিমুখ নির্লিপ্ত প্রজন্ম নিয়ে আমরা সম্মুখে এগিয়ে যাচ্ছি। আর এ ইতিহাস বিমুখ তরুনরাই বয়োবৃদ্ধদের ভেলকিবাজিতে আজ কারাগারে নয়তো অন্ধকার কবরে, মারে কিংবা মরে। এ ইতিহাস বিমুখ সংকীর্ন কন্ঠ থেকেই বেরিয়ে আসে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবী, অথচ এ অধিকার আদায়ের প্রশ্নে প্রাণ দিয়েছে আমাদের পূর্বজ, আমাদের পিতা। একি বিস্ময়!
মানচিত্রের ক্যানভাসে নিয়ত বেড়ে চলছে ভীবৎষ মৃত্যুমুখ, নৈতিক স্লেট ক্ষয়ে যেতে যেতে এখন শূন্য প্রায়, নৈতিকতা পরিবার ও পাঠশালা থেকে বিদায় নিয়ে সেঁটে আছে বইয়ের পাতায়, ভোরের অযান ছাপিয়ে উচ্চে আজ ধর্ষিতার ঘোঙানির সুর, কাসার ঘন্টা স্টপ হয়ে আছে-সন্ধ্যা হলেই বেড়ে যায় আসুরিক চিৎকার...তবে কি আমরা এখানেই শেষ? নাকি কিছু করার আছে? আছে কি?
আন্ডার গ্রাউন্ডের ডন আর অভিবাবকত্বে থাকা নেতা কিংবা শিক্ষকের ‘কন্ঠ ও কর্তব্য’ যখন এক রূপ ধারন করে, ‘আস্তানা আর অঙ্গন’ যখন তফাৎ ঘুচিয়ে নেয়, তখন ‘আমি আছি’ বা ‘লাব্বাইক’ বলতে পারা তরুনদেরই জাগতে হয়, জেগে উঠতে হয় ভোর প্রত্যাশী মায়ের ডাকে, তারুণ্যের মেজাজে জাগাতে হয় স্বার্থের মদে মগ্ন, তন্দ্রাচ্ছন্ন আপন জাতিকে; যাদের সাথে জড়িয়ে থাকে আমাদের ভালো বা মন্দ থাকার শর্ত, যাদেরকে সাথে নিয়েই আমরা আমাদের যাপনের সংবিধান লিখেছিলাম এবং যাদেরকে সাথে নিয়েই রচনা করবো আগামীর যথার্থ সংবিধান।
১৯.১০.১৯
No comments:
Post a Comment