Monday, May 11, 2020

সাহেব বিবি গোলাম - ভূবন মুন্সী


রহস্যের সিক্রেট ফাঁস হয়ে আছে। খোলা ঝিনুকের মতোন ওপেন পড়ে আছে। আর থকতকে, তুলতুলে নরোম মাংস, যা ঝিনুকের জিহ্ব নামে পরিচিত এবং স্লেটিক পাঁজর তলের নরোম মাংস- পোকায় কিলবিল করছে, গুয়ের মতোন গন্ধ ছড়াচ্ছে, পাঁচ দিনের পঁচা বাসি মরার মতোন গন্ধ ছড়াচ্ছে। সবাই নাক ধরে আছে- কী এক ঝাঁঝালো অদ্ভুত গন্ধ, দম বন্ধ হয়ে আসে। তবু বিক্ষপ্তরা, বিচ্ছিন্নরা, একা একারা - সবাই সয়ে যাচ্ছে। ভয়ংকর নোংরাকে সয়ে যাওয়ার হ্যাবিট তৈরি হয়েছে ইতোমধ্যে। ধর্ষণ সয়ে গেছে, শোষণ সয়ে গেছে,  পরকীয়া, শোয়া-শুয়ি সয়ে গেছে, ইভেন মৃত্যুও সয়ে গেছে। ভেরি স্যাড ম্যাটার, গোলামরা সওয়াতে এ্যাডিক্টেড হয়ে গেছে। স্পর্ধা লকারে তুলে নিয়ে এসেছে বিড়ালের মতোন তুলতুলে কাতর বিনয়।

এইতো সেদিনের কথা - কত কত মুভমেন্ট, স্লোগান। অ্যাকাডেমিক, নন-অ্যাকাডেমিক সবাই আসতো। রিজন্যাবল ট্রুথ বলেতো কিছু আছে। সব ছেড়ে দিয়ে ন্যাংটো হয়ে বসে থাকা যায় না, মুখে পট্টি মেরে বাঁচা যায় না। অনেক মত ছিলো, অনেক পথ ছিলো। থাকতেই পারে- এটা নরম্যাল। সবাই যার যার টেকনিক অ্যাপ্লাই করতো। গোলটা এক। কেমন করে সব হাওয়া হয়ে গেলো। সব খালি হয়ে গেলো। কয়েক দিনের মধ্যেই হারাম-হারামী, পতিত-পতিতা, খদ্দের-খানকিতে সবটা ভরে গেলো।

সিগারেটের ধোঁয়ার ফাঁক গলে এখনো সবটা স্পষ্ট দেখা যায়। কেন পারফিউম লাগাও তা জানি, কেন রাত জাগো তাও জানি, কেন সাদা পাঞ্জাবি পড়ে ইন্নোসেন্ট সাজার চেষ্টা করো তাও জানি। ফুসফুসে, লিভারে, ডিওডেনামে, ইলিয়ামে, ক্ষুদ্রান্তে, বৃহদন্ত্রে- সবটা জুড়েই কফ, থুথু , বমি, গু-মুত, লোভ-লালসা আর ন্যাংটোপনা, ছিনালপনা, খানকিপনা। প্লেইন লিভিং হাই থিংকিং এখন ভাইস-ভর্সা।

তবে অ্যাকাডেমিকদের ব্যাপারটা অদ্ভুত। কেমন করে সবাই ঘোড়া হয়ে গেলো, গাধা হয়ে গেলো, খ্যামটা নাচনে অ্যাডিক্টেড হয়ে গেলো। গাইড বই গুলো কোন ড্যাসই ওদের শিখাতে পারলোনা। যাওবা শিখালো- চাতুর্যতার মুখোশ, মুনাফেকি, বিশ্বাসঘাতকতা, মিথ্যাচার, যৌনতা ছাড়া আর কিছু না। পাহাড়ি ঢলের মতোন, প্লাবনের মতোন ডার্কনেস তাদের ঘিরে ধরলো। হৃদয়ে কী কারো মোম বাতিও জ্বলেনা আজ, কিংবা অতীতের কুপি বাতি, হ্যারিকেন ইত্যাদি? মশাল, হ্যাজাক, সার্চ লাইট আশা করা আকাশ কুসুম কল্পনা!

অন্তত দু চার জন তো বেরিয়ে আসবে। সাহেব, বিবি, গোলামদের ঘর হতে দু এক জন করে। সবাই কি থার্ড জেন্ডার! সবাই গা এলিয়ে শুয়ে থাকবে? ম্যাটারিয়াল কন্ডিশন কি কিছুই নেই, কিছুই চোখে পড়ে না? ল্যান্সের সবটা জুড়ে শুধুই কি বিজ্ঞাপন, টাকা, নারী, নাপাক খায়েস?

স্বর্গে মর্তে পাতালে শয়তানকে খোঁজেছি
সে কোথাও কেন্নোর মতোন গুটিয়ে আছে
পলাতক সে।
আজ মানুষই পথে পথে হিংসা ছড়ায়
লোভ নিন্দার বাণী বাজারে বিক্রি করে।
আমি গতকাল যিশুর বেদনার্ত মুখ দেখেছি
ক্রুশবিদ্ধ যিশুর সেই হাসিটা কান্না হয়ে গেছে
বেদনার বীজ গলে গলে ধমনীট রক্ত যথেষ্ট
নীলাভ আর ফোঁটা ফোঁটা সে রক্ত ক্লান্ত ঘামের
মতো ঝরে পড়ছিলো।
কনিষ্ঠার উপর বৃদ্ধাঙ্গুল বসিয়ে
বুদ্ধ যেন ব্যার্থতার হিসেব গুণতেছিলেন
কী এক অদ্ভুত বিষন্নতার ছাপ আয়ত চোখে,
সক্রেটিসও দেখলাম নীল হয়ে মরে আছে।
তারা ভেবেছিলেন পৃথিবীটা একদিন মানুষের হবে
অথচ মানুষ গুলো আজ মারা যাচ্ছে
পৃথিবীর সবুজ থেকে সাফ হয়ে যাচ্ছে ক্রমশ
ক্রমশ মিথ্যাই একমাত্র সত্য হয়ে যাচ্ছে।

১১.০৫.২০২০

No comments:

Post a Comment