মানুষ সামাজিক ও রাজনৈতিক জীব। সমাজ নিয়ন্ত্রণের মূল চাবিকাঠি শিক্ষা, সেই শিক্ষার হাতেখড়ি পরিবার (একজন ব্যক্তির প্রথম সংগঠন) থেকে যা সমাজিক কোষ। নির্দিষ্ট ভূখন্ডে সংঘবদ্ধভাবে বসবাসরত বিশাল জনগোষ্ঠীকে সমন্বয়ের জন্য গড়ে উঠে সংগঠন, তার জন্য সর্বাগ্রে প্রয়োজন নিয়ম নীতি ও ভাবাদর্শিক চর্চা। ভূমিষ্ঠ শিশুর অসচেতনভাবে রাজনীতিতে পদার্পন জন্মসনদ দিয়ে, অতঃপর শুরু হয় ক্রমাগত রাজনৈতিক র্যাট-রেস।
সত্যই সুন্দর, সুন্দরই সত্য। কিন্তু তা অাজ ভুলে গিয়ে ছাত্র নেতা থেকে শুরু করে জাতীয় পর্যায়ের রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ অাসুরীক তান্ডবলীলায় নিজেদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করছে নাকি সচেতন ভাবে দায়িত্ব এড়িয়ে যাচ্ছে?
সচেতনভাবে রাজনীতি চর্চা ব্যাতিরেখে সবাই অাঙুল ফুলে কলাগাছের মতো হাইব্রিড নেতা হতে ব্যস্ত।রাজনীতি বলতেই সকল রাজনৈতিক ব্যক্তিদের মাথায় চলে আসে মাইকে গলাবাজি, রাজপথে মিছিল, বোমাবাজি, হরতাল, লুট, ক্ষমতার অপব্যবহার, জনগনকে বিভিন্ন ফাঁদে ফেলে তাদের থেকে স্বার্থ হাসিল করা অার তাই "জনগনই সকল ক্ষমতার উৎস" জ্যাঁ জ্যাঁক রুশোর সেই লাইনটি পুঁথিতে ঠাই পেয়েছে স্ব-সম্মানে, প্রায়োগিক ক্ষেত্রে নয়।
বাংলাদেশ যে দলগুলো শাসন করছে এবং ভবিষ্যতে শাসন করার অভিপ্রায় নিয়ে ক্ষমতার স্বর্ণশিয়রে বসার ইচ্ছা পোষণ করে যাচ্ছে তাদের চিন্তাভাবনার মাঝে সম্মিলিত হওয়ার কোন লেশটুকু নেই কিংবা যাও বা ভাবছে তা অনেক কুয়াশাচ্ছন্ন।
নিউটনকে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের মেম্বার করা হয়েছিল। সমগ্র পার্লামেন্টারীয়ান জীবনে তিনি মাত্র একটি কথা বলেছিলেন "জানালা খুলে দাও"; এমন নির্বাক অংশীদারত্ব কাম্য নয়।
দেশের তত্ত্ববিদগন ঐক্যের পথ অনুসন্ধান করার পরিবর্তে দলাদলি বা বিরোধিতার পথে হাঁটছে।বিরোধীতার চিন্তা থেকে বিরোধীতাই জন্ম নেয় অথচ যেখানে সকলের লক্ষ্য জনগণ তা ভুলে সামান্য স্বার্থের জন্য নিজেদের মধ্যে রেশারেশির পাল্লা ভারী করছে।
এদেশে সকলে দল করছে ক্ষমতার জন্য। 'পাওয়ার গেইম' এ পরিনত হয়েছে সমসাময়িক রাজনীতি।মানবিকতার সামান্য স্ফুরণ নেই। রাজনৈতিক মূল্যবোধ, সৌন্দর্য, নৈতিকতা, দায়দায়িত্ব, সংস্কৃতি সব আজ লুপ্ত।
সময় নিরন্তর পরিবর্তনশীল, তাই প্রয়োজন হয়ে পড়েছে সর্বক্ষেত্রে বিজ্ঞাননিষ্ঠভাবে নতুনত্বের।রাজনৈতিক ক্ষেত্রেও তা সত্য হয়ে উঠেছে, ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের হাতে জন্ম নেওয়া পুরাতন, জীর্ণ রাজকীয় রীতিনীতি থেকে সরে এসে নতুনভাবে সুনির্দিষ্ট মতাদর্শিক দিশায় নতুন রাজনীতির দ্বার উন্মোচন করে সংকট থেকে উত্তরণ ধ্রুব সত্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।
২০.০৬.২০২০
No comments:
Post a Comment