Monday, June 1, 2020

রাজনীতিই বিশ্ব অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে - মোঃ ইয়াছিন মিয়া


প্রকৃতির বিবর্তনের ফলেই মানুষের বিবর্তন এসেছে। আমার পূর্বপুরুষদের বীরত্বগাথা প্রকৃতিরই অংশ। মানুষ এক প্রাকৃতিক প্রাণী। বিবর্তনিক পথে আধুনিক মানুষ।

পূর্ব ইতিহাস ছিল শ্রমের সংগ্রামের। প্রকৃতির সেই উদয়হীন সংগ্রামের একক ছিল শক্তি-শ্রম, বুদ্ধিদীপ্ত তারুণ্যতা। সেই শক্তি সংগ্রামের মূলে ছিল জল, খাদ্য, বাতাস। জলে বিশুদ্ধতা ছিল, খাদ্যে এতোটা ভেজাল ছিল না, বাতাসে অর্থের গন্ধ ছিল না।

ক্রমিক ধারায় বিবর্তনিক মানুষ এক দারুণ দুনিয়ার জন্ম দিয়েছে। বাতাসের আদিম রূপ হারিয়ে গেছে। 'অর্থ-বাতাসে' পৃথিবীর নিশ্বাস-প্রশ্বাস চলে। অর্থ এখন প্রকৃতিটাকেও হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছে। বিবর্তন এখন মানুষের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়, প্রকৃতির উষ্ণতা-আদ্রতা অনেকাংশে কৃত্তিমতায় চলে। একমাত্র টাকাই দরিদ্রকে উষ্ণতা দিতে পারে।

পুঁজিবাদী দুনিয়ায় প্রতীকী একটা গোলাপের কোন মূল্য নেই। সমরেশ বলেছিলেন, 'একটি গোলাপের কুড়ি যদি সুখাদ্য হতো তাহলে হয়ত আমরা কখনোই একটি ফুটন্ত গোলাপ দেখতে পেতাম না।'

বর্তমান বিশ্বের প্রাকৃতিক হুমকি অর্থনৈতিক দুঃশাসন ঢেকে রেখেছে। পুঁজিবাদী দুনিয়া ক্রমেই পরিবেশকে ভারসাম্যহীনতার দিকে নিয়ে যাচ্ছে।

যার প্রমাণ ইতোমধ্যে আমাদের মাঝে রয়েছে।  করোনা ভাইরাসকে যদিও ভাল রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতার অধিকারী ব্যাক্তি প্রতিহত করতে পারে, তবুও হাজার হাজার মানুষ মারা যাচ্ছে; অধিকাংশ মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম এবং পাশাপাশি কোন রোগে আক্রান্ত; বরফ গলে হাজার বছরের জীবাশ্ম গলে নতুন নতুন ভাইরাসের প্রকোপ সৃষ্টি করছে; পরিবেশের ভারসাম্যহীনতার ফলে মানুষ মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হচ্ছে; মানুষের গড় আয়ু ক্রমেই কমে যাচ্ছে।

প্রকৃতির প্রতি অর্থনীতির এই নির্দয় চাহনি - সমগ্র পৃথিবীর জন্যে এক ভয়াবহ ভবিষ্যত অপেক্ষা করছে।

সকল সমস্যার মূলে রয়েছে পুঁজিবাদী অর্থনীতি। বিভিন্ন পরিবেশবাদী সংস্থা গুলো অর্থনীতি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। পৃথিবীর প্রয়োজন নিয়ন্ত্রিত বিশ্ব অর্থনৈতিক ব্যবস্থা; যেহেতু পরিবেশ বৈশ্বিক ভাবে নিয়ন্ত্রিত-অনিয়ন্ত্রিত হয়। একমাত্র রাজনীতিই বিশ্ব অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে; নিয়ন্ত্রিত অর্থনৈতিক ব্যবস্থাই পরিবেশকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।

১৬.০২.১৪২৭

No comments:

Post a Comment