Wednesday, October 27, 2021

ফ্রানৎস কাফকা - হাসান রাকিব - মেসেঞ্জার অব কসমোলজি।





ফ্রানৎস কাফকা বিংশ শতাব্দীর বিশ্বসাহিত্যের সবচেয়ে পভাবশালী লেখক।

এ পর্যন্ত নোবেল বিজয়ী ১০৯ জন লেখকের মধ্যে ৩২ জনই তাঁদের লেখায় কাফকার সরাসরি প্রভাব আছে বলে স্বীকার করেছেন। উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের পরে আর কেনো লেখককে নিয়ে এতটা লেখালেখি বা গবেষণা হয়নি, যা হয়েছে কাফকাকে নিয়ে। গত শতকের মধ্য-নব্বইয়ের আগেই, মৃত্যুর সত্তর বছরের মধ্যে, তাঁকে নিয়ে লেখা হয়ে গেছে ১০ হাজার বই; আর ১৯৯৬ থেকে ২০১০ এর ভেতরে প্রতি ১০ দিনে তাঁর ওপর বের হয়েছে একটি করে নতুন গবেষণা- গ্রন্থ। 

কাফকার সাথে আমার পরিচয় অনেকদিন আগের, তাঁর লেখা মেটামরফোসিস গল্পের মাধ্যমে অসাধারন গল্প;
মধ্যবিত্ত পরিবারের উপার্জনকারী যুবক গ্রেগর সামসা একজন বিক্রয়কর্মী। সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখে সে একটা আড়শোলা হয়ে গেছে, এরপর'ই গল্পটি মোড় নিতে থাকে বিভিন্ন দিকে যে মা তার এতো কাছের তিনি তাকে দেখতে আসতে চাচ্ছেন না যে বোনকে তিনি এতো ভালোবাসতেন গানের স্কুলে ভর্তি করে দিতে চেয়েছিলেন তার কাছেও তিনি অসহ্য হয়ে উঠছেন। বাবা তাকে আপেল ছুড়ে মারছেন যার আঘাতে তার শরীরে ক্ষত তৈরি হয়, তাকে পঁচা উচ্ছিষ্ট খাবার দেওয়া হয় কাজের মহিলা এসে খাবার দিয়ে যায় মারে কাজের মহিলা তাকে আঘাত করতে চায়। গ্রেগর সামসা যে এখন আড়শোলায় পরিনত হয়েছে সে মাঝেমাঝে  তার ঘরের দরজা দিয়ে মাথা বের করে দেখতে চায় বসার ঘরে সবাই কি করছে?
 কি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে? তারপর এক সময় তার ঘরের দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয় মাঝে মাঝে খাবারও দেওয়া বন্ধ করা হয়।
বন্ধ ঘরে সামসা দেয়াল বেয়ে বেয়ে হাঁটে ঘরের সিলিংএ দুই পাশের দেয়ালে,মাঝে মাঝে দেখতে চায় বাহিরে বৃষ্টি হচ্ছে কিনা, সে সবার সাথে কথা বলতে চান বোঝাতে চান যে সে হয়তো আরশোলা হয়ে গেছে কিন্তু সে এখনো সে তাদের গ্রেগর সামসা'ই রয়ে গেছে সে সব আগের মতোই উপলব্ধি করতে পারে কিন্তু তার কথা কেউ বুঝতে পারে না।
তারপর একদিন গ্রেগর আহত হয় ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে যায় তার নড়াচড়া অতঃপর ক্ষুধার্ত অবস্থায় চলতে থাকে তার দিনযাপন এদিকে তার বাবার ছূড়ে মারা আপেলের পিঠের ক্ষতটাও বাড়তে থাকে এবং একদিন পরিবারটি আবিষ্কার করে যে আরশোলাটা মারা গেছে। আর গল্পের শেষটায় দেখা যায় গ্রেগরের মৃত্যুতে পরিবারটা সস্থি পায় এবং সবাই মিলে কোথাও বাস ভ্রমনে বের হয়।

এক অদ্ভুত ও আশ্চর্য রকমের গল্প মেটামরফোসিস, কাফকা এখানে গল্পে একজন মানুষকে আরশোলাতে রুপান্তরিত করেছেন কিন্তু বাস্তব জীবনে একজন মানুষের পক্ষে কখনো আরশোলা হওয়া সম্ভব নয়। তাহলে এখানে এই রুপান্তরটা কি মানুষের মনোজগতের নাকি মানুষের সম্পর্কের এমন একটা প্রশ্ন ফ্রানৎস কাকাকে করা যেতেই পারে, কিন্তু হয়তো কাফকা এমন প্রশ্নের উত্তর দিতে চাননি তাই গল্পটায় লিখে গেছেন।

- হাসান রাকিব

No comments:

Post a Comment