Saturday, August 1, 2020

রোবটিক সভ্যতা || ভূবন মুন্সী।




যন্ত্রের কটকট শব্দে ঘুম থেকে জেগে উঠি। চেয়ে দেখি কৃত্রিম সূর্যটা প্যাঁচার মতোন অনুভবহীন চোখে তাকিয়ে আছে আমার দিকে। সরল প্রযুক্তি দিয়ে দাঁত ঝকঝকে করে বেরিয়ে পড়ি রাস্তায়। একবিংশের নতুন সকাল। শতাব্দীর আকীকাটা জরুরী। কোন ডাকনাম যুৎসই?

যন্ত্র নিয়ত নিজেকে বিকাশ করে দখলে নিচ্ছে মানুষের স্থান। নির্মল প্রকৃতি নির্বাসিত, তাই যান্ত্রিক প্রকৃতিতে মানুষের বোধে অটো নেমে এল রোবটিক প্রেম। যান্ত্রিক সংসারে মানুষ গুলো জৈবিক রোবট। জন্মানো শিশুরা স্মল টয়।

জৈবিক রোবট গুলো টয়দের শিক্ষা দিতে খুলে বসে স্কুল নামের ডিজিটাল মার্কেট। প্রশিক্ষত সিনিয়র জৈবিক রোবট গুলো স্মার্ট টয়দের ট্যাকনিক্যালি কোয়ালিফাইড করে গড়ে তুলে। টুয়েন্টি ফার্স্ট সেঞ্চুরির দুই দশকেই রোবটিক স্বরূপে ডানা মেলে মানুষের সভ্যতা, মূখ্যত আজ ডাকনাম রোবটিক সভ্যতা।

নিকাহ শব্দটা বিলুপ্ত হয়ে ওঠে আসে লিভ টুগ্যাদার। খাদ্য গ্রহন এখন এনার্জি চার্জিং, সেক্স ইজ ওয়ান কাইন্ড অব গেমিং। চোখটা রোবটিক লেন্স আর বোধ এক প্রকার সেটাপ প্রোগ্রামিং।

যন্ত্র আপন বৈশিষ্ট্যেই বোধহীন, মৃত। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় যা কিছু করে তা পূর্ব নির্দিষ্ট বিধায় তা অভিনয়। শব্দ বা দৃশ্য গ্রহণের পর স্পন্দন জাগেনা বলেই মৃত কিংবা ডাকনাম রোবট।

আজ জৈবিক রোবট গুলো নিয়ে পৃথিবীতে বিদ্যমান রোবটিক সোসাইটি। ভাব বিনিময় নেই, আছে সিগন্যাল  সেন্ডিং রিসিভিং। কথা শব্দ নেই, আছে যান্ত্রিক সাউন্ড। সব মত পথ হ্যাঙ হয়ে যায় যান্ত্রিক সভ্যতার টাচ পেলে। সব ব্যার্থ হয়ে যায়।

রোবটিক পথে টার্ন করা এ প্যারালাইজড সভ্যতাকে ইউটার্ন করতে শুরুতেই প্রয়োজন- মানুষ তুমি মানুষ হও। জৈবিক মগজে যে মানবিক আর্তির বসবাস, তাকে যান্ত্রিক জটিলতা মুক্ত করতেই প্রয়োজন সাংস্কৃতিক সংগ্রাম।

আপন হৃদয়ের কম্পন যে বুঝে, সে অবশ্যই বুঝবে অন্য বুক। যে শুনতে পায় নিজ হৃৎপিন্ডের গমগমা ধ্বনি, সে অবশ্যই কালীক আর্তি শুনতে পাবে। আর যারা বধির, জনমান্ধ নয় তারা অবশ্যই রোবটিক বুক চিড়ে বেরিয়ে আসবে মানব প্রেমের সওগাত হাতে।

জন্তু-জানোয়ার বা যান্ত্রিকতার ফাঁদ হতে বেরিয়ে আসাই এ শতাব্দীর প্রধান চ্যালেন্জ।

৩০.০৭.১৯


 
রোবটিক সভ্যতা


No comments:

Post a Comment