কবির প্রত্যাশা আজ বৃষ্টি হোক। এই অস্থির সময়, কলঙ্ক কালিমা সব ধুয়ে যাক। পৃথিবীর গভীরতর অসুখে, পাথরের মতোন এই পাষাণ কালে – মমতার প্লাবন আসুক। নিপুণ কৌশলে, তুমুল তেজে সব কিছুকে পুড়িয়ে শুদ্ধ করা যায়। সবই তো দাহ্য বস্তু। কে জ্বালাবে আগুন- এই প্রতীক্ষা শুধু।
প্রকাশক : মেসেঞ্জার অব কসমোলজি।
প্রকাশ : আগস্ট, ২০২০ খ্রিস্টাব্দ।
. আজ বৃষ্টি হোক - আলী রীয়াজ
আজ বৃষ্টি হোক
আজ আকাশ ভেঙে বৃষ্টি নামুক,
মাটি ফুঁড়ে উঠুক বৃক্ষের সম্ভাবনা,
লতাগুল্মগুলো ধুয়ে মুছে সবুজ হয়ে তাকাক আকাশে;
আজ আকাশ ভেঙে নামুক জলের ধারা|
গ্রীষ্মের আগুন নিভিয়ে দিয়ে
সন্তানহারা মায়ের অশ্রুধারার মতো
মমতার প্লাবন আসুক,
আনন্দের ঝর্ণাধারার মতো নামুক বৃষ্টি;
বৃষ্টি ধুয়ে দিক -
জনপদ, অস্থির সময়, অনিশ্চিত দিনরাত্রি|
আজ আকাশ ভেঙে নামুক করুণার ধারা|
এই বৃষ্টিতে সবাই নামুক উঠোনে, পথে
কলুষের কালিমা মুছুক
মৃত্যুর ভীতি হোক অপসৃত
আলিঙ্গনে বদ্ধ হোক মানুষেরা|
আজ আকাশ ভেঙে নামুক স্বপ্ন,
দুঃসময় দূর হোক
শিশুরা মাতুক কলহাস্যে
কিশোরেরা জমে থাকা জলে ব্যস্ত হোক
ক্রীড়ায়, কৌতুকে;
সলজ্জ্ব তরুণী খুঁজুক প্রিয়জন,
তরুণের চোখের তারায় জ্বলুক স্বপ্নের রেখা,
আজ আকাশ ভেঙে নামুক ভালোবাসার জলধারা,
বৃষ্টি হোক - আজ বৃষ্টি হোক|
২০ জুলাই ২০২০ খ্রিস্টাব্দ
কোথাও কি বৃষ্টি হচ্ছে?
কোথাও কি বৃষ্টি হচ্ছে?
আকাশ ভেঙে, বিস্তৃত জনপদকে ধুয়ে ফেলে
এই যে শহর তার প্রতিটি ধুলোকণা স্পর্শ করে
মাঠের পর মাঠ পেরিয়ে যাচ্ছে এলোমেলো বৃষ্টির বাতাস|
আমাদের যতটা কালিমা ছিল
তার সবটুকু মুছে দিতে
কোথাও কি বৃষ্টি হচ্ছে?
ব্যস্ততার, জীবনের, জীবিকার অন্ধ বৃত্তে
আমাদের হয়নি দেখা এই যে প্রকৃতি
তার কাছে কতটুকু ঋণী,
পৃথিবীর গভীর অসুখ যখন
যখন আমরা সবাই একাকী, দূরত্বের কুহকে বন্দী
তখন কি আকাশ ভেঙে নামছে জলের ধারা?
এই যে আকাশ আমি ভাগ করি সকলের সাথে
নিঃশ্বাসে ভাগ করি আমাদের প্রাণ
সেখানে যতটা কালিমা ছিলো
হিংসা ছিল, বিদ্বেষের বিষ ছিল
সবটুকু ধুয়ে যাবে?
এই মৃত্যু-সময় কি ধুয়ে যাবে?
একদিন, কোনো এক বৃষ্টি সকালে
আমরাও হাতে হাত হেটে যাবো,
তখনও বৃষ্টি হবে অপরিচিত কোনো জনপদে|
অপত্য স্নেহে জননী আঁকড়ে ধরে শিশুর আঙ্গুল
ফিরে যাবে তাঁদের শৈশবে|
আজ এই বৃষ্টি ধুয়ে দিক
সব কিছু ধুয়ে দিক|
২৮শে এপ্রিল ২০২০ খ্রিস্টাব্দ
সব কিছু দাহ্য বস্তু
সব কিছু দাহ্য বস্তু যদি জানো জ্বালাতে আগুন,
জলেও আগুন জ্বলে
অশ্রুতে বারুদ থাকে
পোড়াতে পারে রাজ সিংহাসন।
বৃক্ষে-বৃক্ষে আলিঙ্গনে অকস্মাৎ পুড়ে যায় বন,
অগ্নিগিরি মাটি শুধু, পদতলে
যতক্ষণ লাভাস্রোত তাকে না দীর্ণ করে;
লাভার আগুন কাকে গ্রাহ্য করেছে?
একখানা বিস্মৃত দেশলাই তৈরি করে আগুনের
লেলিহান শিখা;
সবকিছুই দাহ্য বস্তু,
যদি কেউ জ্বালায় আগুন।
১১ই অক্টোবর ২০১৯ খ্রিস্টাব্দ
আরও পড়ুন -
শ্রী রীতির কবিতা গুচ্ছ - লাল রঙ
ভূবন মুন্সীর কবিতা গুচ্ছ - ইস্পাতের ঠোঁট
লেখা পাঠাতে যোগাযোগ করুনঃ
মেইলে পাঠাতে -
shimul2016.bsm@gmail.com
No comments:
Post a Comment